সারা দেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে এর বিরুদ্ধে ৩ দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিন দিনের এই কর্মসূচির মধ্যে ২৯ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও দেশের অন্যান্য মহানগরে বিক্ষোভ করা হবে। আর ৩১ জুলাই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ হবে জেলা পর্যায়ে।’
তিনি জানান, উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচির তারিখ পরে জানানো হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সভায় দেশজুড়ে চলমান ভয়াবহ লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ভয়াবহ সংকট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সভা মনে করে, সরকারের অতি কাছের ব্যবসায়ীদের মুনাফার স্বার্থে পরিকল্পিতভাবে নিয়মনীতি বিসর্জন দেয়া হয়েছে। চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট ঘিরে দুর্নীতির কারণে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। আর এসব কারণেই বর্তমানের এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শহরে প্রতিদিন দুই-তিন ঘণ্টা এবং গ্রামাঞ্চলে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। শিল্প ও কৃষিতে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির ওপর লোডশেডিংয়ের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।
‘জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সমস্যাকে আরও জটিল করেছে। দেশে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি না করে বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মূল উদ্দেশ্য, নিজ দলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিজেদেরও অনৈতিক সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা।’
দলের স্থায়ী কমিটির সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনা ও সরকারের মদদপুষ্ট সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হয়।
ফখরুল জানান, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের মূল্য ৩২ শতাংশ এবং পাম অয়েলের দাম ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত কমলেও সরকার সমর্থিত লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র দেশের বাজারে আগের মূল্যে বিক্রি অব্যাহত রাখায় সভায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসঙ্গে দ্রব্যমূল্য কমাতে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়