‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক।’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার) ধ্বনিতে মুখোরিত এখন আরাফাত ময়দান। হজযাত্রীরা ইতোমধ্যে মিনা থেকে পৌঁছেছেন আরাফাতে। বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে আজ সারাদিন সেখানে অবস্থান করবেন তারা। আজ ৯ জিলহজ্জ পালিত হবে পবিত্র হজ, যাকে আরাফা দিবসও বলা হয়।
হজযাত্রীরা আল্লাহর প্রেমে উন্মাদের মতো ছুটে এসেছেন আরাফাতের ময়দানে। সঙ্গে রয়েছে শুধু একটি ব্যাগ-যাতে রাখা যায় কিছু অতীব জরুরি কিছু জিনিসপত্র। যেমন থালা-বাসন, পানির মগ, ওষুধ ও ওজু-গোসলের জন্য গামছা জাতীয় কাপড়। মূলত আরাফাতের ময়দানে ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করাই হজের মূল কাজ। সহিহ হাদিছে রয়েছে- যিনি ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অকুফে আরাফায় অবস্থান করবেন- তিনিই হাজী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। আর হজে মকবুল বা কবুল হজের ফজিলত হচ্ছে-নিশ্চিত জান্নাত লাভ।
এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দিবেন শায়খ আবদুল¬াহ বিন সুলাইমান আল মানিয়া। চলতি বছর হজের খুতবার জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৮৯ বছর বয়সী শায়খ আবদুল¬াহ বিন সুলাইমান আল মানিয়া আইনজ্ঞ হিসেবে বেশ প্রসিদ্ধ। তিনি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসির ইসলামিক ফিকহ একাডেমির সদস্য। এর আগে তিনি মক্কা আল মোকাররামা কোর্টের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দান সংলগ্ন মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা শুরু হয়। হজের খতিব মসজিদে নামিরা থেকে যে খুতবা প্রদান করেন মনোযোগ দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়। খুতবা শেষে জোহরের আজান হয়। একই আজানে দুই ইকামতে জোহর ও আসরের কসর দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়।
আরাফার ময়দানে উপস্থিত সফেদ-শুভ্র কাপড়ের ইহরাম পরিহিত হাজীদের সামনে দেয়া হজের খুতবা বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এ খুতবা যেমন সমবেত হাজীরা শোনেন, তেমনি শোনেন বিশ্ববাসী। আরাফাতের ময়দানের এ খুতবা এবার বাংলাসহ ১০টি ভাষায় অনূদিত হবে।
সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে হজযাত্রীরা রওনা হবেন মুজদালিফার উদ্দেশ্যে। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করা ছাড়াও জামারায় নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান শেষে হজযাত্রীরা রওনা হবেন মিনার উদ্দেশ্যে।
দীর্ঘ ৯০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছে না কেউ। তবে সৌদিতে অবস্থানরত হাতেগোনা কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি এই বিরল সুযোগ পেয়েছেন। বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।