খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এ সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র লাঞ্চিত হওয়ার একটি খবর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া সংঘর্ষের ওই ঘটনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় তারা প্রথমে ৫ দফা এবং পরবর্তীতে ৬ দফা দাবি নিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির অধিকাংশ পূরণ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসিসহ ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের অপসারণ এখন তাদের অন্যতম দাবিতে রূপ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ তার সাথে সংগঠিত অপ্রীতিকর ঘটনা, পদত্যাগ এবং ওই দিনে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে কথা বলেন।
ভিসি বলেন, আমি নিজেও বুঝতে পারছি না এই কথাটা তারা কেন বলছে আমি তাদের(ছাত্রদের) সহযোগিতা করিনি। ওরা যখন ১ টা ৪০ মিনিটে আমার কাছে আসলো আমি নিচে লাঞ্চে যাচ্ছি তখন। তখন থেকে শুরু করে আমি কন্টিনিউয়াসলি চেষ্টা করে যাচ্ছি বিভিন্ন দিক থেকে। এখন এটা কোন দিকে, কোথা থেকে, কে কি করছে, ভালো করে কিছু বলতে পারব না। এরপর ছাত্রদের সাথে ইভেন আমি তিন তিনবার আমার অফিস থেকে ছাত্ররা যখন আসছে ওদের সাথে আমি সেখানে গিয়েছি। অন্যান্যরা আমাদের ছাত্রদের যেখান থেকে আক্রমণ করেছে। একবার আমি পকেট গেটের বাইরে পর্যন্ত গিয়েছি ছাত্রদের সাথে। ওদের আমি রিকোয়েস্ট করেছি তোমরা ভিতরে থাকো। আমি যাচ্ছি, আমার শিক্ষক যারা আছেন। আরেকজনে সে বলল মেইন গেটে, ঐদিকেও আমি যাচ্ছিলাম। তারপর দুঃখজনক ঘটনা।
ভিসি বলেন, আপনারা জানেন হয়তো আমি মাঝে কিছুদিন অসুস্থ ছিলাম। হঠাৎ করে আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ মনে হলো। এ সময় আমার কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বলল স্যার আর সামনের দিকে যাওয়ার দরকার নেই, ওখান থেকে বিভিন্নভাবে ঢিল ছুড়ছে, আপনি আহত হয়ে যাবেন। আপনি থাকেন, আমরা যাচ্ছি। ওই অবস্থায় তখন থেকে ছাত্ররা বললো না স্যার যেতেই হবে, এইটা করতে হবে, ওইটা করতে হবে। আমি আর পারছিলাম না, তখন ওখান থেকে একটা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আমি মেডিকেল সেন্টারের দিকে যাচ্ছি, যে আমার একটু ডাক্তার দেখানো দরকার। গেলাম, তারপর ওরা বলতেছে আপনাকে বাইরে আসতে হবে। আমি বাইরে আসলাম। তখন আমাকে কোশ্চেন করছে। যাই হোক খারাপ আচরণ করেছে। তারপর এক পর্যায়ে দেখি চারদিক থেকে আমার উপরে এসে হামলা করেছে। তখন ওইখানে আমার যারা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল তারা ওইখান থেকে আমাকে কোনভাবে রেসকিউ করে নিয়ে মেডিক্যাল সেন্টারে একটা রুমে নিয়ে আসে। তারপর থেকে আমি অবরুদ্ধ।
তিনি বলেন, ছাত্রদের যদি স্পেসিফিক মনে হয়। স্পেসিফিক আপনি এটা পারেন নাই। আপনি এটা করেন নাই। ওই যে বললাম যতগুলো দাবি আছে আমাদের কাছে রিটেন আছে। মেনে নিয়েছি। শুধু মেনে নিয়েছি বললে ভুল হবে এক্সিকিউট করেছি। রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও কেউ রাজনীতি করলে বা রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলে আমরা তাদেরকে পানিশমেন্ট দিব। কি পানিশমেন্ট দিব আমরা এটা বলেছি। যারা এমপ্লয় আছি, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছে, এটা যদি প্রমাণিত হয় সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে আমরা এখান থেকে বরখাস্ত করব। আর যদি ছাত্ররা রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে, এটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে আমরা তার ছাত্রত্ব বাতিল করব। এই সিদ্ধান্তটা আমরা নিয়েছি। সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যারা এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তারা যদি আমাদের ছাত্র হয়, এটার জন্য আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, ৪ সদস্য বিশিষ্ট। তিনটা ওয়ার্কিং ডে’র মধ্যে তারা আমাদের কাছে একটা রিপোর্ট দিবে। যারা দোষী তারা সর্বোচ্চ শাস্তিটা পাবে। এই কমিটির কার্যক্রম আজ সকাল থেকে শুরু করেছে। যে দাবি ছিল (ছাত্রদের) প্রত্যেকটা দাবি আমরা পূরণ করেছি। হ্যাঁ তারপরে তারা সর্বশেষ বলছে আপনারা পদত্যাগ করেন।
তিনি বলেন, এখন আমরা তাদের দাবিগুলো মেনে নেয়, তাদের দাবির জন্য আমরা যদি সব ব্যবস্থা করি, তাহলে আমাদের কেন পদত্যাগ করতে হবে? হ্যাঁ ডিএসডব্লিউ ঠিকমতো রোলপ্লে করছে না। আমরা এটা অবশ্যই দেখবো। কেন সে রোল প্লে করছে না। আমরা তো তাদের দাবি অনুযায়ী সবকিছু করছি। ছাত্রদের যদি মনে হয় স্পেসিফিক যে আপনি এটা পারেন নাই। এটা তারা বলুক।