সোশ্যাল মিডিয়াতে কম আসার কারণ জানালেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নিজেই। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তার ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে লাইভে এসে এ তথ্য জানান।
আসিফ নজরুল বলেন, আমি বিভিন্নভাবে জানতে পারলাম যে, আমি কেন মিডিয়াতে অনুপস্থিত? এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা-কল্পনা হচ্ছে। এমন কি কেউ কেউ এমন সব আজগুবি কথা বলেছেন, আমি নাকি বিদেশে চলে যাচ্ছি। এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা বা চিন্তাও আমার মাথায় নেই। আমি মনে করি এ ধরনের তথ্য, গুজব, গুঞ্জন বা আজগুবি তথ্য যারা ছড়াচ্ছেন, তারা জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে সেটাকে বিতর্কিত করতে অসৎ উদ্দেশ্যে করছে।
আইন উপদেষ্টা সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, এসব কথায় আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। আমি কয়েক দিন আগেও পত্রিকাতে ইন্টারভিউ দিয়েছি। তবে এটা ঠিক আমি মিডিয়াতে কম আসি। আমার অনেক কাজ। আমার মনে হয়েছে আমার কার্যক্রমে যদি কোনো অগ্রগতি হয় সেটা আমি আপনাদের জানাবো। অহেতুক কেন মিডিয়ায় আসবো? এখনতো আমি আর টকশোর মানুষ না। এখন আমাকে অনেক কাজ করতে হবে, কাজটাতে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। আমার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের দুই ক্ষেত্রেই কিছু অগ্রগতি হচ্ছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনাদেরকে অগ্রগতিগুলো জানাবো।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, যারা এ ধরনের গুজব, গুঞ্জন রটাচ্ছেন তারা কোনো ধরনের ইনভেস্টিগেশন ছাড়া এ ধরনের গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। না হলে মানুষতো আপনাদের মিথ্যাবাদী ভাববে, আপনাদের কথা বিশ্বাস করবে না। এগুলা করা উচিৎ না।
বাংলাদেশকে একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য, রাষ্ট্র সংস্কার করার জন্য বরং আপনারা আমাদের পজেটিভলি সাজেস্ট করবেন। ভুল হলে বলবেন। একদম সম্পূর্ণ আজগুবি, অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় কোনো তথ্য দেওয়ারতো কোনো মানে হয় না। এটা একধরনের চরিত্রহননও। আমি আশাকরি আমার বক্তব্যের মাধ্যমে সকল বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে, বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়র দায়িত্ব পেয়েছেন আসিফ নজরুল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। আসিফ নজরুলের জন্ম ১৯৬৬ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (সম্মান) ও এলএলএম করেছেন।
১৯৯৯ সালে যুক্তরাজ্যের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (সোয়াস) থেকে আন্তর্জাতিক আইনে পিএইচডি লাভ করেন আসিফ নজরুল। পরবর্তীকালে জার্মানির বন শহরের এনভায়রনমেন্টাল ল সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৯১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে আসিফ নজরুল সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় কাজ করতেন। তিনি কয়েক মাস সরকারি কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবেও কাজ করেছেন।
আসিফ নজরুল জনপ্রিয় কলামিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী। তিনি অনেক বইয়ের সহ-লেখক। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জার্নাল ও বইয়ে সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক আইনি বিষয়ের ওপর গবেষণাপত্র লিখেছেন।
২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের ব্যুরোর সদস্য ছিলেন আসিফ নজরুল। তিনি সুশাসন, ন্যায়বিচারের অধিকার, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইইউ ডেলিগেশন ইন বাংলাদেশ, ইউএনডিপি, এডিবি, ডিএএনআইডিএ, এসআইডিএ, কেয়ার, টিআইবিসহ বিভিন্ন সংস্থার পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে