ইউক্রেনকে ‘বেসামরিকীকরন’ ও ‘নাৎসীদের হাত থেকে মুক্ত’ করার যে লক্ষ্য রাশিয়া নিয়েছে, তা পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশটিতে সামরিক অভিযান জারি রাখার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু।
মঙ্গলবার মস্কোতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শোইগু বলেন, ‘ইউক্রেনকে রুশ অভিযানের উদ্দেশ্য দেশটিকে দখল করা নয়, বরং পশ্চিমা দেশগুলোর কারণে ইউক্রেনের ওপর যে সামরিক হুমকির সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে সেখানকার জনগণকে মুক্ত করা এবং দেশটির ক্ষমতাসীন নাৎসীপন্থী শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণের লক্ষ্য নিয়েই রুশ বাহিনী এগোচ্ছে। এই লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’
সংবাদ সম্মেলনে রুশ বাহিনীর প্রশংসা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি সেনা সদস্য যুদ্ধক্ষেত্রে যে বীরত্ব, সাহসিকতা, বিবেক ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিচ্ছে, সেজন্য আমরা তাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও প্রশংসা জানাচ্ছি।’
দীর্ঘ দুই মাস ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ২ লাখ সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সেনা অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার ভাষণ সম্প্রচারের পরপরই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় এবং তড়িৎগতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পাশপাশি চতুর্দিক থেকে দেশটির ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী।
ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হচ্ছে ইউক্রেনের বাহিনীর। তবে গত দুই দিন ধরে সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে। রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় ইউক্রেনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটিতে ইতোমধ্যে শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে খারকিভে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ইউক্রেনের সরকারকে দায়ী করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের সরকার নিজেদের গদি বাঁচাতে সেখানকার সাধারণ জনগণকে ঢাল হিসেবে ব্যবাহার করছে এবং আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি এলাকা থেকে রুশ বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে।’
‘রুশ অভিযানের লক্ষ্য ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ নয়। কিন্তু ইউক্রেনের সরকারের নীতির কারণে দেশটির বেসামরিক লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’