চলছে লকডাউন, কর্মঠ হাত দুটো হয়ে পড়েছে কর্মহীন, বসে আছে বেকার। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গোপালগঞ্জেও চলছে লকডাউন। এ লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছে বেকাদায়। বিশেষ করে রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক, দোকান কর্মচারীরা ও থ্রি হুলাইলার চালকরা বেশী সমস্যায় রয়েছে।
লকডাউনের কারণে গোপালগঞ্জের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছে বেকায়দায়। কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে পরিবার নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক, থ্রিহুলাইলার চালকরা বেশী সমস্যায় রয়েছে। সরকারি বেসরকারী অফিস, আদালত ও মার্কেট বন্ধ থাকায় শহরের লোকজন আসছে খুবই কম। সেই সাথে শহরের বসবাসরত মানুষজনও সড়কে কম বের হচ্ছে। রোজগারের আশায় কেউ কেউ রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক ও থ্রিহুইলার নিয়ে রাস্তায় বের হলেও ভাড়া পাচ্ছে কম। তার পরও পেটের তাগিদে বাইরে বের হলেও রয়েছে পুলিশী বাধা। আগে দিনে ৫০০ থেকে ১হাজার টাকা রোজগার হতো সেখানে আয় হচ্ছে মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। যা দিয়ে পরিবারের ভরণ পোষন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
এদিকে তাদের মত একই অবস্থা দোকান কর্মচারীদের। দোকান পাট বন্ধ থাকায় কাজ করতে পারছেন না তারা। এতে দোকান মালিকদের কাছ থেকে বেতন তো দূরের কথা আর্থিক সহযোগীতাও পাচ্ছেন না। ফলে কোন রকমে না খেয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে তাদের। পাশাপাশি এই শ্রেনীর মানুষ রয়েছেন বেশী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। খেটে খাওয়া এসব মানুষের কাছে এখন করোনা ঝুঁকির চেয়েও জরুরি তিনবেলা খাবার জোগাড় করা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চাপাইল গ্রামের রিক্সা চালক মফিজুর রহমান বলেন, আমার সংসারে বয়স্ক মা, স্ত্রী আর ১০ বছর বয়সী এক ছেলে ও ৬ মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। সরকার ঘোষিত প্রথম দফায় লকডাউনে রিক্সা নিয়ে বাইরে বের হইনি। কিন্তু ৫ জনের সংসার চালাতে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি। বাইরে লোকজন না থাকায় ভাড়া কম হচ্ছে।ফলে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে ।
সদর উপজেলার চর সোনাকুড় গ্রামের রিক্সা চালক ইবাদুল মোল্যা বলেন, গাড়ি নিয়ে বাইরে বের হলে এখন আর ভাড়া পাচ্ছি না। আগে যেখানে ৮’শ টাকা রোজগার করতাম সেখানে এখন দু’শ টাকাও রোজগার করতে পারছি না। এতে সাংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
দোকান কর্মচারী সুশান্ত সাহা বলেন, সংসারে তিনজন সদস্য রয়েছে। দোকান মালিক দোকান খুলতে না পারায় দোকানে যেতে পারছি না। ফলে বেতনও পাচ্ছি না। এখন পযর্ন্ত কোন সরকারী সহযোগীতা পাইনি। লকডাউন তুলে দোকান খুলে দিতে সরকারের প্রতি দাবী জানান তিনি।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, লকডাউন ঘোষণার পর ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলায় ৬ হাজার ৬৬২টি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়া হয়েছে। জিআর পেয়েছি ৩৫ হাজার পরিবারের জন্য ৫’শ টাকা করে এং ভিজিএফ এসেছে ৮৯ হাজার ৩৬৩ পরিবারের জন্য ৪৫০ টাকা করে। আজ থেকে যাতে এ বরাদ্দগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে যায় তার কাজ শুরু করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম