খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরে কারখানায় আগুন : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২
  হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম তদন্তে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৬৫

রোযার ঈদে খাবারে বাড়তি সতর্কতা

গে‌জেট ডেস্ক

কেমন হবে ঈদের দিনে খাবার। কী–ই বা থাকতে পারে সকাল-দুপুর-রাতে। কতটুকুই হওয়া উচিত সারা দিনের ক্যালরি। সেসব জানা থাকা জরুরি। বিশেষ করে এক মাস রোজার পর ঈদের দিনে অতিভোজন কোনোভাবেই শরীরের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়।

সুস্বাস্থ্য পেতে দরকার সঠিক জীবনযাত্রা। এর মধ্যে থাকতে হবে নিয়মমাফিক ঘুম, খাওয়া-দাওয়া, ব্যায়ামসহ প্রয়োজনীয় আরও বেশ কিছু বিষয়। তবে এর মধ্যে খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে খুব দ্রুত। কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়। খাবার গ্রহণের অনিয়ম হতে পারে অনেক ধরনের। তবে পুষ্টি চাহিদার কথা চিন্তা না করেই যখন আমরা খাবার খাই, তা একধরনের অনিয়মের মধ্যে পড়ে। সামনেই আসছে ঈদ। ঈদ আনন্দের বেশির ভাগজুড়েই থাকে বিশেষ খাবারদাবার। এই খাবারের পুষ্টিমানের কথা বিবেচনা করে তবেই খাওয়া প্রয়োজন।

ঈদের দিন হালকা খাবারই শ্রেয়

দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর ঈদের দিনের খাবার নিয়ে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। তাই আগে থেকেই ভেবেচিন্তে তৈরি করে নিতে পারেন খাবারের মেনু। যদিও ঈদের দিনের প্রায় পুরো সময়েই থাকে খাবারের আয়োজন। তবু কোন বেলাতে কত ক্যালরি ও পুষ্টি আপনি পাচ্ছেন, তা জানাটাও অত্যন্ত জরুরি। তবে যে খাবারই খান না কেন, সেটা হতে হবে কম তেলে রান্না। কারণ, অতিরিক্ত তেল খাবারের পুষ্টিমান কমাতে পারে, বলছিলেন পারসোনা হেলথের প্রধান পুষ্টিবিদ শওকত আরা সাঈদা। ঈদের সারা দিনের খাবারের পুষ্টি ও খাদ্যমান নিয়েও দিয়েছেন বিশেষ পরামর্শ।

ঈদ-সকালের নাশতা

ঈদের সকাল মানেই ঈদের নামাজ। খাবার নির্বাচনে থাকতে হবে সজাগ দৃষ্টি। আগের দিন পর্যন্ত রোজা রেখে ঈদের সকালে একসঙ্গে অনেক খাবার না খাওয়া ঠিক হবে না। বরং পরিমিত আহারই শ্রেয়।

ঈদ–সকালের নাশতায় রুটির পাশাপাশি থাকতে পারে হালকা তেলে ভাজা পরোটা বা সবজির নরম খিচুড়ি। তার সঙ্গে মুরগির তরকারি বা ডিম ভুনা রাখা যায়। তবে সকালের খাবারকে স্বাস্থ্যকর বানাতে একটা সবজি রাখতে হবে অবশ্যই। সবশেষ মিষ্টি খাবারে থাকতে পারে সেমাই, পায়েস, ফিরনি বা পুডিং। তবে যেটাই থাকুক, সেটা পরিমাণমতো খাবার পরামর্শ শওকত আরা সাঈদার।

সকাল ও দুপুরের মাঝে

ঈদের দিনে অনেক সকাল ও দুপুরের মাঝের সময়টাতে হালকা কিছু খেতে পছন্দ করেন। সে ক্ষেত্রে ফুচকা ছাড়া বা অল্প ফুচকা দেওয়া চটপটি খেতে পারেন। যেহেতু এখন বেশ গরম, তাই এ সময়ের সব থেকে পুষ্টিকর খাবার হলো তাজা ফল বা ফলের সালাদ। এ ছাড়া ফলের জুস, বেলের শরবত, ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে, তাতে শরীরে পানিস্বল্পতা তৈরি হবে না।

দুপুরের খাবার

ঈদের দিনে দুপুরের খাবারে খুব হালকা তেলের পোলাও বা ভুনা খিচুড়ি খাওয়া যাবে। দুপুরে ডিপ ফ্রাই খাবার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। তবে বেক করা কাবাব বা গ্রিল করা মুরগি ভালো খাবার হবে। ঈদের দিনের একটি পরিচিত খাবার হলো রোস্ট। কিন্তু আমরা হয়তো জানি না এক মাস রোজা রাখার পর রোস্টজাতীয় খাবার গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। তাই রোস্টের বদলে কম তেলে রান্না মুরগির কোরমা রাখা যায়। এ ছাড়া পুষ্টিবিদ শওকত আরা সাঈদা ঈদের দিনের রান্নার কৌশলের পরিবর্তনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, এখন রান্না পদ্ধতির কিছুটা পরিবর্তনের মাধ্যমে যেকোনো মজাদার খাবারই খাওয়া যায়। ডিপ তেলে না ভেজে স্বাস্থ্যকর উপায়ে এয়ার ফ্রায়ারে তেল ছাড়া ভেজে খেতে পারি।

এ ছাড়া দুপুরের জন্য কম মসলার চায়নিজ সবজি খুবই স্বাস্থ্যকর পদ। রান্না করা যেতে পারে সবজির কোরমা। কোমল পানীয়ের বদলে বোরহানি বা মাঠা শ্রেয়। থাকতে পারে টক দই।

রাতের হালকা খাবার

ঈদের দুপুরে একটু ভারী খাবার খাওয়া হয়। তাই রাতে সহজে হজম হয়, এমন খাবারই রাখতে হবে। তাই ভাতের সঙ্গে অন্য খাবার খাওয়ার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের। রাতে মাছ হতে পারে আদর্শ খাবার। মাছের ফিলে সয়া সস, লেবুর রস ও গোলমরিচ দিয়ে মেরিনেট করে রান্না করলে গতানুগতিক রান্না থেকে ভিন্ন হবে। আবার প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডও পাওয়া যাবে।

রাতে ভুনা বা কষানো মাংস না খেয়ে স্টু করে খাওয়া উচিত। স্টু করার পদ্ধতিটি একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। এর জন্য প্রথমে গোলমরিচ, লেবুর রস ও লবণ দিয়ে মাংস পানিতে সেদ্ধ করতে হবে। এবার কিছু সবজি হালকা তেলে ভেজে সেদ্ধ মাংসে ছেড়ে বিট লবণ ও গোলমরিচ দিয়ে দিতে হয়। এটা অনেকটা স্যুপজাতীয় খাবার, যা রাতের জন্য খুবই স্বাস্থ্যসম্মত ও উপাদেয়। এ ছাড়া করা যায় বেক করা সল্ট রোস্টেড চিকেন, যা ক্ষতিকর ক্যালরি ও ফ্যাট থেকে কিছুটা রক্ষা করে।

কতটুকু ক্যালরি খাবেন

ঈদের দিনে একজন সুস্থ মানুষ সকালে ২৫০ থেকে ৩০০ ক্যালরি খেতে পারেন। সকাল-দুপুরের মাঝে ১২০ থেকে ১৫০ ক্যালরি। দুপুরে ৪৫০ থেকে ৫০০ ও রাতে ৩৫০ ক্যালরির বেশি নয়।

ঈদের দিনে শিশুদের জন্য

শিশুদের ক্ষেত্রে তেমন বাধা নিষেধ থাকে না। তবে বেশি চিনি, বেকারির খাবার, কোমল পানীয় যাতে মাত্রা ছাড়া না খায়, সেটা নজর রাখতে হবে।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!