নভেল করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি রোধে চলমান কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ) আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আগামী ১১ আগস্ট গণপরিবহন ও দোকানপাটসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠা খুলবে। তবে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
পরিবহনের চালক ও তার সহকারী এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সের যাত্রীদের করোনার টিকা গ্রহণের সনদ সঙ্গে রাখতে হবে। মঙ্গলবার সরকারের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব, সচিব ও বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার প্রধানরা অংশ নেন।
বৈঠক শেষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম আগামী ৭ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে। প্রত্যেককে স্থানীয় টিকাদানকেন্দ্রে গিয়ে টিকা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আজকের এ বৈঠক থেকে। ১১ আগস্ট দোকানপাট খুললে যাতে কর্মচারীরা কর্মস্থলে যোগ দিতে পারে। কর্মচারীদের টিকার সনদ নিয়ে কাজে যোগ দিতে হবে।
গণপরিবহন চালুর বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ১১ আগস্ট থেকে গণপরিবহন চলবে। তবে এগুলো চলবে রোটেশন পদ্ধতিতে। একটি রুটে একাধিক কোম্পানির যানবাহন চলাচল করে থাকে। মালিকরা একেকদিন একেকটি কোম্পানির বাস চালাবেন। তবে প্রতিটি যানবাহনের চালক ও তার সহকারী এবং ১৮ বছরের উপরের যাত্রীদের সবার করোনার টিকা গ্রহণের সনদ সঙ্গে রাখতে হবে।
রোটেশন পদ্ধতির বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ধরুণ গাজীপুর থেকে ১০০ গাড়ি প্রতিদিন ঢাকায় আসে। এখান থেকে প্রতিদিন ১০০টি না এসে ৩০টি বা ৫০টি চলাচল করবে। যেগুলো আজকে চলবে সেগুলো আগামীকাল চলবে না। অন্যগুলো চলবে। স্থানীয় প্রশাসন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি ঠিক করে নেবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, লঞ্চ, স্টিমার ও রেলও একইভাবে রোটেশন পদ্ধতিতে চলবে। সব যে পরিমাণে অতীতে চলছিল, সে পরিমাণ না চলে সীমিত আকারে চলবে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো নির্ধারণ করে জনগণকে অবহিত করবে। যেমন রেল হয়তো ১০টা চলতো, এখন ৫টা চলবে। কোন কোন সময়ে কোনটা ছাড়বে এবং কীভাবে যাবে, এগুলো মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ঠিক করে জনগণকে অবহিত করবে। যাতে করে যাত্রীদের কোনো অসুবিধা বা বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন,টিকা নেওয়ার বিষয়টি এমনভাবে করা হয়েছে, যেখান থেকেই তিনি টিকা নেবেন সঙ্গে সঙ্গে তা ওয়েবসাইটে চলে যাবে। কেউ অসত্য তথ্য দিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবে না। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে ধরা পড়ে যাবে। টিকা গ্রহণসহ আনুষাঙ্গিক কাজ করতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে, যাতে সবাই ১১ আগস্ট কাজে যোগ দিতে পারে।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন,গ্রামাঞ্চলে দেখা যাচ্ছে অনেকেই হাট-বাজারে যাচ্ছেন কিন্তু কারো মুখেই মাস্ক নেই। সবাইকে মাস্ক পরতে বাধ্য করার বিষয়টি শুধু আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর একার পক্ষে সম্ভব নয়, এ জন্য সমাজের সচেতন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
করোনারভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন) আরোপ করে সরকার। গত ৩০ জুলাই আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম