মহান আল্লাহ আমাদের উপর রোজা ফরজ করেছেন যেমন পূর্ববর্তীদের উপর করা হয়েছিল। তথাপি এই উম্মতের রোজাদারকে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যে অনন্য রাখা হয়েছে যা পূর্বেকার উম্মতের জন্য ছিল না। সেই সব অনন্য বৈশিষ্ট্যে অন্যতম একটি হল রোজাদারের জন্য সমুদ্রের প্রানীকুলের দোয়া। যা ইফতার অবধি অব্যহত থাকে।
মূলতো স্থলভাগের দ্বীগুনের চেয়ে বেশী জায়গাজুড়ে রয়েছে সাগর বা পানি। এবং গবেষণায় বারবার প্রমাণীত হয়েছে যে স্থলভাগের তুলনায় পানিজগতে প্রাণীর বিচরণ বহুগুণ বেশী। রয়েছে সহস্র প্রজাতির কীট পতঙ্গ। সুতরাং এই সবই রোজাদারের জন্য দোয়া করতে থাকে।
এছাড়া উক্ত হাদীসে আরো যে বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে তা হলো রোজদারের জনপ্রিয়তা। ভূ-পৃষ্ঠের সৃষ্টিরাজি ছাড়িয়ে রোজাদারের জনপ্রিয়তা পানিজগতে ও পৌছে যায়। যা একজন রোজাদারের বিশাল প্রাপ্তি।
আরো লক্ষণীয় বিষয় হলো, মানুষ এবং জিন ব্যতীত অন্য সব সৃষ্টিই নিষ্পাপ। কারণ তাদের সাথে আল্লাহর কোন বিধানের সম্পৃক্ততা নেই। সুতরাং তাদের কোন হিসাব নিকাসও নেই।
অতএব এমন নিষ্পাপ সৃষ্টির দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়াতে কোন বাঁধা থাকেনা। আর যখন লক্ষকোটি এরুপ নিষ্পাপ মাখলুক আল্লাহর কাছে রোজাদারের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তার সফলতার ব্যাপারে আর কি সন্দেহ থাকতে পারে।
পরিশেষে একটি হাদিসের মাধ্যমে আলোচ্য বিষয়টির ব্যাপ্তি আরো বর্ধিত হতে পারে।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, তখন জিবরিলকে ডেকে বলেন, আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি, সুতরাং তুমিও তাকে ভালোবাস। অতঃপর জিবরিল আলাইহিস সালাম তাকে ভালোবাসতে থাকেন। তারপর (জিবরিল) আকাশবাসীকে (ফেরেশতাদের) বলে দেন যে, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। অতএব তোমরা তাকে ভালোবাস। তখন আকাশের সকল ফেরেশতা তাকে ভালোবাসতে থাকেন। অতঃপর সে ব্যক্তির জন্য জমিনেও জনপ্রিয়তা দান করা হয়।
সুতরাং উল্লিখিত হাদিসের আলোকে আরো জানা গেল যে, দুনিয়ার মাখলুকের ভালোবাসা মূলত আসমানবাসীর ভালোবাসারও নিদর্শণ। কেননা যখন কেউ আসমানবাসীর কাছে ভালোবাসার পাত্র হয় তবেই সে পৃথিবীবাসীর কাছেও ভালোবাসার পাত্র হতে পারে। এ থেকে বোঝা যায় রোজাদারের জন্য কল্যাণপ্রার্থীর সংখ্যা কত বেশী।
(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )
খুলনা গেজেট/এমএইচবি