রেহানা সেখ। বয়স মাত্র ৪০। মুম্বাই পুলিশের হেড কনস্টেবল। তাঁর স্বামীও পুলিশের চাকুরিতে কর্মরত। পুলিশের নাম শুনলে আজো মানুষ উন্নাসিক মনোভাব পোষণ করে। অথচ মুম্বাই পুলিশের এই হেড কনস্টেবল গরীব ও দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের নিজের বেতনের অর্থ সঞ্চয় করে শিক্ষা দান করছেন। এই ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই ফুটপাতের।
স্নেহবশত মুম্বাইয়ের মানুষ তাকে ‘আধুনিক মাদার টেরেসা’ বলে। মুম্বাইয়ের ওয়াজা, তালুকা ও রায়গরের গরীব ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় সবাইকে আর্থিক সাহায্য দেন। এক্ষেত্রে রেহানা সমস্ত ভেদাভেদের উর্ধ্বে।
রেহানা প্রথমদিকে প্রাথমিক স্কুলের গরীব ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষা প্রসারের কাজ করছিলেন। এখন হাইস্কুলের গরীব ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষা প্রসারের কাজ করছেন। স্বামীও তাকে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মুম্বাই বলতে শুধু বলিউড, চিত্রতারকা, ডন দাউদ ইব্রাহিম, হাজি মস্তান বা বাল থাকারকে বোঝায়। কিন্তু তাঁর মাঝেও রেহানা সেখ এক আলোর ঝলকানি ও মানবতার প্রতীক। এই করোনা অতিমারির সময়েও তিনি ৫৪ জনের বেশি মানুষকে প্লাজমা দান করেছেন। হাসপাতালে করোনা রোগীদের শয্যা, রক্ত এবং অক্সিজিনের যোগান দিয়ে মানুষের পাশে ও মানুষের সেবায় নিয়োজিত ।
এই সব কাজকর্ম করার জন্য মুম্বাইয়ের পুলিশ কমিশনার হেমন্ত নাগরালে রেহানাকে সম্মানিত করেছেন। তবে রেহানা খুব আত্মপ্রচারবিমুখ। নিজের ছবিও তুলতে দেন না। অথচ নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন এ যুগের ‘মাদার টেরেসা’।
তাঁর এই সেবামূলক কাজকে এগিয়ে নিতে, বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে আরও অনেক দূর যেতে চান রেহানা সেখ। এজন্য তিনি বিশ্বের নারী সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম