খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

রেকর্ড দাবদাহে পুড়ছে খুলনা অঞ্চল

নিজস্ব প্রতিবেদক 

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে যশোর জেলা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শুধু যশোরই নয়, দাবদাহে পুড়ছে গোটা খুলনা বিভাগ। দিন দিন বাড়ছে তাপমাত্রা।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি ও খুলনার কয়রায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, জলাশয় ভরাট করা ও গাছপালা কেটে স্থাপনা গড়ে তোলাই প্রধানত গরম বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এ ছাড়া লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরম অনুভুত হচ্ছে বেশি।

তিনি জানান, আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া খুলনায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, খুলনার কয়রায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরায় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি, মোংলায় ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি এবং কয়রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে গত ১৩ এপ্রিল থেকে দাবদাহ চলছে। টানা দাবদাহে বিপাকে পড়েছে মানুষ। অসহ্য গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। টানা দাবদাহে নেই বৃষ্টির দেখা। ফলে বিপাকে পড়েছে মানুষ ও প্রাণীকুল। নাভিশ্বাস নেমে এসেছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া গরমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক স্থানে নলকূপ ও পাম্পে ঠিকমতো পানি উঠছে না।

অসহ্য গরমে পথচারী, যানবাহন চালক ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কাছে পানি, শরবত ও ফল নিয়ে খুলনার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও তরুণ সমাজ।

খুলনার শিববাড়ি মোড়ে দাড়িয়ে থাকা ইজিবাইক চালক রফিক মিয়া বলেন, অসহ্য গরম। এমন গরম কখনও পড়েনি। তবুও খেয়ে পড়ে বাঁচতে হবে। গরমের দিকে তাকালে পেট চলবে না।

খালিশপুরের রিকশা চালক আব্দুর রহিম বলেন, পেট বাঁচাতে হলে কাজে নামতে হয়। ঘরে স্ত্রী, তিন সন্তান রয়েছে। তাদের লেখাপড়া, খাবার জোগাড়, বাড়ি ভাড়া ম্যানেজ করতে হিমশিম খেতে হয়। ঝড় বৃষ্টি, রোদ উপেক্ষা করেই কাজে নামতে হয়।

এদিকে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে না যেতে খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। করা হচ্ছে মাইকিং। এ ছাড়া গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাপপ্রবাহের জন্য খুলনা সিভিল সার্জনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে খুলনা জেলাবাসীকে নিম্নোক্ত নির্দেশনা পালনে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো-

বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া প্রখর রোদে বাইরে বের না হওয়া। আর ঘরের বাইরে বের হলে ছাতা ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে।
পানি শূন্যতা পরিহার করতে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করা ও বাসি, খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
ভাজা পোড়া খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে।
ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর বার বার মুছতে হবে।
শ্বাসকষ্টের রোগী ও শিশুদের বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিদ্যমান প্রতিকূল আবহাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ/মৎস্য/ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
বাস শ্রমিকসহ অন্যান্য শ্রমিকরা যেন বেশিক্ষণ তীব্র রোদে না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!