মার্চের শুরুতেই আওয়ামী লীগের আহ্বানে খুলনায় অসহযোগ আন্দালন শুরু হয়। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বাহিনীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। রূপসা এলজিইডি অফিসের সামনে তখন ইপিআরের খুলনাস্থ সদর দপ্তর। মার্চের শুরুতেই সদর দপ্তরে টানপোড়েন শুরু হয়। বাঙালি ইপিআরদের ওপর পাঞ্জাবীদের সন্দেহ বাড়তে থাকে।
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ রূপসা সদর দপ্তরে ইপিআরের বাঙালি সদস্যদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ কেড়ে নেয়। বেশ কয়েকজন ইপিআরের সদস্য পালিয়ে যায়। এপ্রিল মাসে পৌঁণে দুইশ’ ইপিআরকে খুলনা সদর দপ্তরে বন্দী করে রাখা হয়। তাদের গতিবিধি সন্দেজনক হওয়ায় তাদেরকে দফায়-দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বন্দী ইপিআর সদস্যদের মধ্য থেকে ২৫ জনকে হত্যা করে আইয়ুব খান সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী খান-এ-সবুরের বাড়ির কাছে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমগাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। লাশগুলো পরবর্তীতে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়। আরও দেড়শ’ জন ইপিআরকে পাকিস্তানী বাহিনী বন্দী করে আটকে রেখে নির্যাতন করে।
দু’-তিনদিন পরপর খাবার অযোগ্য ভাত তাদের সরবরাহ করা হত। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বিশ্বধিকৃত জল্লাদ এ্যাডলফ হিটলারের বন্দী শিবিরগুলোতে এমনভাবে অত্যাচার করা হত। বাঙলার দুশমন খাজা খয়ের উদ্দিনের ব্রিটিশ দালাল পূর্ব পুরুষের আমলে ১৭৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহী সিপাহীদের ব্রিটিশ জল্লাদ বাহিনী হত্যা করে ঢাকার সাবেক ভিকটরিয়া পার্কের আমবাগানের ডালে ঝুলিয়ে রাখে। ঝুলন্ত অবস্থায় সেদিনের বীর শহীদদের লাশগুলো পঁচে-গলে নি:শেষিত হয়েছিল। (সূত্র : জয় বাংলা পত্রিকা, ২৩ জুলাই, ১৯৭১)
খুলনা গেজেট/ টি আই