নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস লিমিটেডের সেজান জুস কারখানায় গত মাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুনে পুড়ে কঙ্কাল হওয়া ৪৯ জনের মধ্যে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে সিআইডি।
বাকি চারজনের পরিচয় শনাক্তের পর পুরো তালিকা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রায় ২০ দিন পর লাশের পরিচয় শনাক্ত করে সিআইডি। রোববার রাতে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য জানায়।
সংস্থাটি অচিরেই আলাদাভাবে নিহতদের প্রত্যেকের পরিচয়ের তালিকা প্রকাশ করবে। এমনকি সেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
পরিচয় শনাক্ত হওয়া লাশগুলোর ব্যাপারে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা ৪৫টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। বাকিগুলো খুব শিগগিরই ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। এই ডিএনএ টেস্ট সম্পন্ন হলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে লাশের পরিচয়সহ পূর্ণ তালিকা বুঝিয়ে দেব।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণাদিসহ স্বল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে সক্ষম হবো।
সিআইডির নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও তদন্ত প্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত কাজ করছি। যার কাছ থেকে যা যা তথ্য পেয়েছি সবগুলো গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে তদন্ত কাজ করছি।
তবে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ লাশের পরিচয় শনাক্ত করেছে কিনা বিষয়টি আমাকে এখনো নিশ্চিত করে জানানো হয়নি। তবে সিআইডি যদি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে সবার পরিচয় শনাক্ত করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে আমারা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সেগুলো বুঝে নিয়ে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবো।
লাশ দাফনের জন্য নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে ৪৯ ও ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়। ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত তিনজন ঢাকা মেডিক্যালে মারা গেলে তাদের পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় তখনই স্বজনদের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়। পরে ভবন থেকে উদ্ধার ৪৯ জনের লাশগুলো আগুনে এতটাই পুড়ে যায় যে দেখে চেনা বা শনাক্ত করা তখন সম্ভব হয়নি। যে কারণে ওই লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানা পুলিশের দায়ের করা মামলা পরবর্তীতে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। মামলায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম ও চার ছেলেসহ মোট আটজনকে গ্রেফতারের পর হাসেমও তার ছেলেরা জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে আসে।
খুলনা গেজেট/কেএম