রিমান্ডের নামে পুলিশের নেওয়া ঘুষ ফেরত চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। একই সাথে মোবাইলসহ অন্যান্য ব্যবহার্য্য জিনিসও ফেরত চেয়েছেন তারা। অন্যথায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় আইনী সহায়তা দেওয়া আইনজীবীরা।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন আইনজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আইনজীবী এড. শহীদ হাসান বলেন, তারা ঝুকি নিয়ে ছাত্রদের মামলায় বিনামুল্যে আইনী সহায়তা দিয়েছেন। বিবেক আর মানবতার কল্যাণে তারা এ কাজ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় রিমান্ডের নামে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন সদর থানার ওসি মোহিদুল ইসলাম, তদন্তকারী কর্মকর্তা মোল্যা মো. সেলিমসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা। অনতিবিলম্বে টাকা ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাতক্ষীরার অন্যতম সমম্বয়ক ইমরান হোসেন জানান, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া ২টি মামলা এখনো চলমান আছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়ক ইমরান হোসেনের কাছ থেকে এক হাজার, শাহারুজ্জামানের কাছ থেকে ৬ হাজার, কাজী সাকিবের কাছ থেকে ৫ হাজার, ইব্রাহিম হোসেনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন পুলিশ পরিদর্শক মোল্যা মো. সেলিম। এছাড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি তারেক বিন আব্দুল আজিজ মঈনুল ইসলামের কাছ থেকে নেন ১৪ হাজার টাকা। সদর থানার ওসি মহিদুল ইসলাম এসএম রোকনুজ্জামানের কাছ থেকে ঘুষ নেন ৩৫ হাজার টাকা।
এভাবেই পুলিশ কর্মকর্তারা রিমান্ডে থাকা শিক্ষার্থীদের নির্যাতন থেকে রেহাই দেওয়ার অযুহাতে তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নেন। এছাড়া পুলিশ শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত কমপক্ষে ১০টি এ্যান্ড্রয়েড ফোন কেড়ে নেন । যা এখনো তাদেরকে ফেরত দেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আন্দোলনকে দমন করতে সদর থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। একটি মামলায় আসামি করা হয় ১৮ জনকে ও আরেকটি মামলায আসামি করা হয় ১৩ জনকে। প্রথম মামলায় ১৩ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মোল্যা মো. সেলিম।
এবিষয়ে পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে