সাগরে লঘু চাপের প্রভাবে নদ-নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় রিং বাঁধ ভেঙ্গে ফের প্লাবিত হয়েছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও সদর ইউনিয়ন। কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে রবিবার দুপুরে প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নসহ আশাশুনি সদর ইউনিয়নের প্রায় ১০/১২ টি স্থানের রিংবাঁধ ভেঙ্গে যায়। ফলে নতুন করে দূর্ভোগ বেড়েছে প্লাবিত এলাকার বানভাসি মানুষের। দীর্ঘ ৪ মাসেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব না হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উল্লেখ্য, গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে ও ২০ আগস্ট নদ-নদীতে অস্বাভাবিক ভাবে জোয়ারের পানির বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকুলীয় বেড়িবাঁধ ও রিংবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বিশেষ করে প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রাম এখনও পানিতে ডুবে রয়েছে। তার উপর চলতি অমাবশ্যায় জোয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় রিংবাঁধ উপচে নদীর পানি লোকালয়ে ঢোকে। পরে গত দুই দিন সাগরে লঘু চাপের প্রভাবে নদ-নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির তোড়ে ফের রিংবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও সদর ইউনিয়নের বির্স্তীণ এলাকা। এতে করে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে নতুন করে পানিতে নিমজ্জিত। দুর্গত মানুষের এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এলাকার শতশত মানুষ আবারও স্বেচ্ছা শ্রমে ভেঙ্গে যাওয়া রিংবাঁধ দিয়ে পানির ঢোকা বন্ধ করার চেষ্টা করছেন।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন ও শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, গত দুই দিনের জোয়ারে প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা, হরিশখালী, কর্মকারবাড়ী, কোলা, শ্রীউলা ইউনিয়নের কলিমাখালী ও মাড়িয়ালা এবং আশাশুনি সদর ইউনিয়নের দয়ারঘাট এলাকায় রিংবাধ ভেঙ্গে নতুন করে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্গত মানুষের দূর্ভোগ আরো বেড়ে গিয়েছে।
গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০টি পয়েন্টে সাড়ে ৫৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায়। ওই সময় বেশকিছু স্থানে রিংবাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হলেও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের বড় একটি অংশের লোকালয়ে চলে জোয়ার-ভাটা। কিছু কিছু এলাকায় রিংবাঁধ দিয়ে পানি বন্ধ করা হলেও তা আবারও ভেঙ্গে গেছে।
খুলনা গেজেট/এনএম