ঐতিহ্যবাহী পাটশিল্পের ধারক রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলোকে বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ৮দফার সুপারিশ উপস্থাপন করেছে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ খুলনার নেতৃবৃন্দ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিপিবি’র কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে এ সুপারিশ তুলে ধরেন তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের আহবায়ক এ্যাড. কুদরত-ই খুদা।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রায়ত্ব মিলগুলো বিরাষ্ট্রীয়করণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে রাষ্ট্রের হাতেই রাখতে হবে, পাটকলসমূহের লোকসানের কারণ চিহ্নিত করে এর সমাধানে পাটের সাথে জড়িতদের নিয়ে জাতীয় সংলাপ করা, দেশের ৭৭টি পাটকল পরিচালনা করতে গঠিত বিজেএমসি’র বর্তমান কাঠামোকে পরিবর্তন করে ২৫টি পাটকলকে পরিচালনার মত দক্ষ ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরি করা, রাষ্ট্রায়ত্ব সকল মিলের মাথাভারী প্রশাসন কমানো, দুর্নীতি টিকিয়ে রাখার জন্যে অশুভচক্র থেকে বছরের পর লোকসানের পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সমূলে নির্মুল করা, মিলগুলোকে স্বায়ত্বশাসন দিয়ে প্রতিটি মিল পর্যায়ে স্থানীয় ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা, স্কপের প্রস্তাবনা অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ব মিলগুলোকে আধুনিকিকরণ করা, পাট পন্যের বহুমুখীকরণ এবং নতুন বিশ্ববাজার অনুসন্ধান করা। একই সাথে ২০১০সালের ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং এক্ট কার্যকরি করার মাধ্যমে সর্বত্র পাটের ব্যাগ, বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যাশা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকার দেশের সকল জাতীয় সম্পদ রক্ষা করবেন। জনগনের সকল অধিকার নিশ্চিত করবেন। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবেন যার অঙ্গিকার জাতীয় সংবিধানের ১৩, ১৪ ও ২৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ করা হয়, গত ২ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহম্মেদ কায়কাউস- এর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, দেশের ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল পিপিপি মাধ্যমে বেসরকারিকরণ করা হবে। শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে চাকুরি থেকে অবসায়ন করা হবে। বিশ্ববাজারে যখন পাটের চাহিদা বাড়ছে, বেসরকারি মিলগুলো যখন লাভবান হচ্ছে। ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রীয় মিলগুলো বন্ধ ঘোষনা করা এবং পিপিপিতে পাটকল চালানোর সিদ্ধান্তে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন নাগরিক নেতৃবৃন্দ।
তারা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় মিলগুলো বেসরকারিকরন করার আগে মিলগুলো কেন লোকসান হচ্ছে তার কারনসমুহ চিহ্নিত করা প্রয়োজন। মাথা ব্যথা মানেই মাথ কেটে ফেলা নয় বরং তার চিকিৎসা করা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এ্যাড. মঞ্জুর উল আলম, এসএ রশিদ ও এ্যাড. বাবুল হাওলাদার প্রমুখ।