রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের এবং ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে খুলনায় গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে গণজমায়েত করে শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে গিয়ে শেষ হয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর। তিনি কিভাবে রাষ্ট্রপতি পদে আছেন আমরা জানতে চাই। ৫ আগস্ট বলেছিল শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র আমার কাছে আছে, তবে গত দিন বলেছে যে আমার কাছে নেই। তিনি কিভাবে এতো বড় একটা পদে বসে থাকে? এমন অনেক ব্যক্তি বড় বড় পদে বসে আছে, তাদের সকলকে পদত্যাগ করতে হবে। রাষ্ট্রপতি চুপ্পু যে পর্যন্ত তার পদ থেকে পদত্যাগ না করবেন সে পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, আমাদের এই দেশ কিন্তু স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা এখনও রক্ষা করতে পারিনি। ছাত্র-জনতা এক হলে সুন্দরভাবে দেশটা পরিচালনা করা যাবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার সমন্বয়ক ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহিব্বুল্লাহ বলেন, ‘বিপ্লবের বজ্রাঘাতে পতন হয়, পদত্যাগ নয়। কিন্তু বিনা ভোটের সরকারের তৈরি রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আজকে পলাতক হাসিনার পদত্যাগপত্র খুজেতে উদগ্রীব। যে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে গেছে তার আবার কিসের পদত্যাগপত্র। তবে চুপ্পু সাহেব হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে জাতির সাথে চরম মিথ্যাচার করেছে। এই মিথ্যাচারের কোনো ক্ষমা হয়না। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা মণ্ডলিদের কাছে আহ্বান করবো স্বৈরাচারের তৈরি মিথ্যাবাদী রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে হবে। আমরা লক্ষ্য করছি আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠার পাঁয়তারা করছে। তাদেরকে বাংলার ছাত্রজনতা রক্তের বিনিময়ে একবার তাদের উৎখাত করেছে। প্রয়োজনে বাংলার ছাত্রজনতা আবারও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবে। সুতরাং অতিদ্রুত আওয়ামী লীগ ও তার অংগ সংগঠনসমূহ নিষিদ্ধ করে বাংলার বুকে তাদের কার্যক্রম চিরতরে বন্ধ করতে হবে’
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পালিয়ে যাওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’
তবে সম্প্রতি মানজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়ত সময় পাননি।’ এরপর নতুন করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ।
খুলনা গেজেট/এমএম