ফর্মুলা গোপন রাখার শর্তে রাশিয়ার স্পুৎনিক টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনের জন্য সমঝোতা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ও রাশিয়ান ফেডারেশন।
এ সমঝোতা সই রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।
মন্ত্রীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসায় বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত এখনও জানায়নি যে তারা টিকা দেবে না। আমরা টিকার অপেক্ষায় আছি।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে চীন তাদের তৈরি ৫ লাখ টিকা উপহার দেয়ার কথা বলেছে।
তিনি জানান, চীনে যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন ও যারা দেশটিতে ব্যবসা করেন তারা চীনের তৈরি টিকা নিতে চায়। এর আগে বাংলাদেশে চীনের নাগরিক এবং রূপপুরে পারমাণবিক প্লান্টে রাশিয়ার নাগরিকদের তাদের দেশের তৈরি টিকা দিতে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি কিছু ভারতীয় নেপালে গিয়ে চীনের তৈরি টিকা নিচ্ছেন। কারণ হিসেবে এই ভারতীয়রা চীনে ব্যবসা করার জন্য ওই দেশে যান বলে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টিকা সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের জানান, সরকার রাশিয়া ও চীনের কাছ টিকা পেতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকার চালান কবে আসবে জানিনা। তবে আশ্বস্ত করেছে তারা। বিকল্প উৎস থেকে টিকা পেতে চীন, রাশিয়ার টিকার বিষয়ে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, শুধু চীন, রাশিয়া নয়; যেকোনো দেশই টিকা দিতে চাইলে সরকার নেবে, যেসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষা উৎপাদন করছে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যে টিকা নিরাপদ, এটা নিশ্চিত হয়েই টিকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হবে।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ৩ কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত বছর নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। এর আওতায় দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।
ভারত সরকারের দুই দফা উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা আসে দেশে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার জন্য রাখা হয়েছে ৪২ লাখ টিকা।
বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ স্থগিত করে। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত টিকা রপ্তানি বিলম্বিত হতে পারে।
কোভ্যাক্সের আওতায় ১৮০টি দেশও সিরাম উৎপাদিত টিকা পাবে। কিন্তু রপ্তানি স্থগিত হওয়ায় এসব দেশও টিকা পাচ্ছে না। ফলে সিরামের কাছ থেকে টিকার নতুন চালান পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই