ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ গ্রামগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে রাশিয়ার অস্ত্রের ডিপোতে আঘাত হেনেছে। যদিও এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে ইউক্রেন।
তবে দেশটির প্রেসিডেন্টের সহকারী মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, একটি দেশ যখন আরেকটি দেশকে আক্রমণ করে তখন কখনো না কখনো তার দায় শোধ করতে হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাশিয়া এবং মলদোভার বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করা হলেও তারা তা অস্বীকার করছে। রাশিয়ার অন্তত তিন প্রদেশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
বেলগোরদ শহরের মেয়র বলেছেন, স্টারাইয়া-নেলিদভকা নামে একটি গ্রামের কাছে একটি অস্ত্রের ডিপোর ওপর বুধবার ভোরে আক্রমণ হয়। আক্রমণের পর ডিপোটিতে আগুন ধরে যায়। তবে দ্রুতই ওই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে কোন বেসামরিক লোক আহত হননি বলে জানিয়েছেন মেয়র ভিয়াশেস্লাভ গ্লাদকভ
এই বেলগোরদে রাশিয়া দুটি স্বল্প-পাল্লার ইসকান্দার-এম ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম মোতায়েন করেছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে রাশিয়া টুডে জানিয়েছে, বুধবার রুশ শহর ভরোনেঝের কাছে একটি নজরদারি ড্রোন ধ্বংস করেছে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রায় ১০ লাখ মানুষের শহরটি কৌশলগত দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
শহরটির মেয়র বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে ছোট আকৃতির ড্রোনটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নাগরিকরা কোনো হুমকিতে নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি। ইউক্রেনই এ ড্রোন পাঠিয়েছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সোমবার কিয়েভের পাঠানো দুটি ড্রোন ধ্বংস করে রাশিয়া। এরমধ্যে একটি হচ্ছে তুরস্কে তৈরি বায়রাকতার ড্রোন।
শুধু রাশিয়ার মূল অংশেই নয় ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত-বরাবর মলদোভার বিচ্ছিন্নতাবাদী ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলেও হামলা হয়েছে। ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলটি ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে। সেখানেও প্রায় দেড় হাজার রুশ সেনা মোতায়েন রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, তাদের টার্গেট করেই এই হামলা হয়েছে। এর আগেও গত কদিন ধরেই সেখানে হামলা হচ্ছে। টার্গেট করা হচ্ছে, বড় অস্ত্রের গুদাম, রেডিও টাওয়ার, এবং সেনা ইউনিটগুলোকে। সেখানে ইউক্রেনের ভেতর থেকে ওড়ানো ড্রোনও পাওয়া গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এর আগে দাবি করেছিলেন, রাশিয়া নিজেই এসব হামলা করছে। এসব আক্রমণের ঘটনা রাশিয়াই সাজিয়েছে যাতে করে ওই অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করা যায়। মস্কো জানিয়েছে, তারা হামলাগুলো পর্যালোচনা করে দেখছে।
অপরদিকে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। এক দিনেই ইউক্রেনের অন্তত ৫৮ টার্গেটে কালিবর মিসাইল হামলা হয়েছে। জাপোরিঝিয়ায় অস্ত্রের ডিপোসহ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, রুশ বাহিনী দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। সেখানে একটি গণভোট আয়োজনেরও চেষ্টা করছে। এতে নির্ধারিত হবে অঞ্চলটি রাশিয়ার অংশ হবে কিনা।
এছাড়া হামলা অব্যাহত আছে মারিউপোলের আজোভস্টাল ইস্পাত কারখানাটিতে। সেখানে লুকিয়ে আছে দুই হাজার ইউক্রেনীয় সেনা। এছাড়া পুরো শহর এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। রাশিয়া এখন দনেৎস্ক অঞ্চলের পোপসানোই এবং রুবিঝনি অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য যুদ্ধ করছে। ইউক্রেনের দাবি তারা ডনবাস অঞ্চলে গত একদিনে অন্তত ৯টি হামলা প্রতিহত করেছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই