বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আসা জাহাজটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকায় বাংলাদেশে ভিড়তে না দেয়ায় পণ্যগুলো এখন ভারতে খালাস করে বাংলাদেশে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নৌ-পরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই রাশিয়া ও ভারতের সাথে আলোচনা শুরু করেছে।
তবে বাংলাদেশ যদি রাশিয়ার সাথে আলোচনার মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে মালামাল আনায় বিলম্ব এবং বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। এর ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হতে পারে।
পাবনার রূপপুরে বারশ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ চালু করার কথা রয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারবে বলে ধারণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পের মালামাল রাশিয়া থেকে আসছে। রাশিয়া এখানে অর্থায়নও করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাশিয়ার যেসব জাহাজ আছে সেগুলো দিয়ে এর আগেও মালামাল বহন করা হয়েছে।
এখন বাংলাদেশ যদি রাশিয়ার সাথে আলোচনার মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করতে পারে তাহলে খুব একটা সমস্যা হবে না।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার গত ১৪ বছর ধরে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন এবং ভারতের সাথে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
গত কয়েকমাসে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে আমেরিকা সরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের অসন্তুষ্টিও প্রকাশ পেয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, সেই ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে ঢাকার রুশ দূতাবাস এক বিবৃতি দিয়েছে, যাতে পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল এবং আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার’ অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিককে ইঙ্গিত করে রাশিয়ার মতো আরেকটি দেশের দূতাবাস থেকে এধরণের বিবৃতি এক নজিরবিহীন ঘটনা।
খুলনা গেজেট/ বিএমএস