নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ সরকারকে নির্বাচিত করেছে এবং ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে, যাদের অধিকাংশ ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগকে— ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কির এমন বক্তব্যকে অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও আওয়ামীসুলভ বলে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি।
দলটি আরও বলছে, ‘দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে রাশিয়া, ভারত, চীন, বা অন্য কোনো রাষ্ট্র ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের গণবিরোধী অপশাসনকে অযাচিত সমর্থন করবে না।’
আজ (শুক্রবার) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী আরও বলেন, তার (রুশ রাষ্ট্রদূত) এই অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও আওয়ামীসুলভ বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বলয়ের বাইরের সকল বাংলাদেশি নাগরিক আজ, নিজেদের অধিকার ও স্বাধীনতা হারিয়ে, নিজ দেশে পরাধীন। গত ১৫ বছর ধরে, গণবিদ্বেষী সরকার যে দুর্নীতি—দুঃশাসন ও দমন—দুর্বৃত্তায়ন চালিয়েছে, সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও পেশার মানুষ তাতে বৈষম্য, অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের সরকার নয় মন্তব্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার ভারত, চীন ও রাশিয়ার সরকার। চীন ও রাশিয়ায় তো গণতন্ত্রের বালাই নেই। আর ভারতে এখন যা চলছে, সেই আগের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য নেই।
তার পরদিন ঢাকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে বিএনপির বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি এ ধরনের বক্তব্য বিশ্বাস না করার আহ্বান জানান।
এরপর আজকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রিজভী আরও বলেন, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশ হিসেবে যে ভোট পড়েছে বলে ফুলিয়ে—ফাঁপিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন, তার বিপরীতে, সারা দেশের ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে প্রাপ্ত সংবাদ, ছবি, ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সত্যিকার অর্থে শতকরা ৫ ভাগেরও কম ভোটার ভোটকেন্দ্রে গেছেন। ভাগ—বাটোয়ারার এই কারসাজির নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল জনগণ প্রমাণ করেছে, বিএনপি ও ৬২টি গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক তথা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের সৌহাদ্যর্পূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ব্যবসা, বাণিজ্য, জ্ঞান ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের ভিত্তিতে। বিএনপি বিশ্বাস করে, দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধনেই দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক সাফল্য নিহিত। তাই বিএনপি রাশিয়াকে আহ্বান করছে, বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, তথা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতার সংকল্প ও মহান আত্মত্যাগের প্রতি উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শনের জন্য।
খুলনা গেজেট/ টিএ