খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ পৌষ, ১৪৩১ | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বগুড়ায় ট্রাকচাপায় বাবা-মেয়েসহ নিহত ৩
  আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : আসিফ নজরুল
  সচিবালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত : প্রেস উইং

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪৭ লাখ টাকার মেশিন চুরি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

রামপাল তাপবিদ্যুৎ  কেন্দ্রের মধ্যে তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে ৪৭ লাখ টাকা মূল্যের কয়লা পরীক্ষার মেশিন (BOMB CALORIMETER) চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গেল ১৬ জানুয়ারি রামপাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে  তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (সিকিউরিটি ও প্রশাসন) মোঃ অলিউল্লাহ।

মামলার বিবরণ থেকে জানাযায়, গেল ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রের জুনিয়র এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, কেমিস্ট আব্দুল মালেক ল্যাব বন্ধ করার সময় টেস্টিং যন্ত্রটি টেবিলের উপরেই ছিলো। আব্দুল মালেক চলে যাওয়ার আগে তালার চাবি ল্যাব-১ এর মুসা পারভেজকে দিয়ে ল্যাব টেকনিশিয়ান মোঃ সাদ্দাম হোসেন এবং তানভীর রহমানকে দিতে বলেন। মুসা পারভেজ তাদের চাবি দেন। রাত দশটায় সে স্থানে ডিউটিতে আসেন মোঃ জাকারিয়া আল রাজী এবং মাসুম বিল্লাহ। ১৫ জানুয়ারি সকাল ৭টায় ডিউটি শেষ করেন। এসময় মোঃ সাদ্দাম হোসেন এবং মোঃ মাসুম বিল্লাহ দায়িত্ব নেন। সকাল ৯টার দিকে রুম ক্লিনার আব্দুল নোমান ল্যাব-২ পরিস্কার করতে যেয়ে টেবিলে মেশিন দেখতে না পেয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। ঘটনার ১১দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মেশিন বা চোরের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদী ও রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও নিরাপত্তা) মোঃ অলিউল্লাহ বলেন, চুরির ঘটনায় আমরা মামলা করেছি, কাজ চলছে। এসব বিষয় আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের কয়লা পরীক্ষার মেশিন চুরির ঘটনায় আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।

এদিকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনায় চুরি সংগঠিত হওয়ায় কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, কয়লা পরীক্ষার মেশিন সাধারণ মানুষের কোনো কাজে লাগার কথা নয়, ছিচকে চোরদের চুরি করারও কথা নয়। বড় কোনো চক্র এবং কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ কেউ এতে জড়িত বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া ল্যাব এলাকায় রাত-দিন ২৪ঘন্টা লোক থাকা স্বত্তেও মামলায় কারো নাম না দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায় এড়ানোর চেষ্টা বলেও মনে করেন তিনি।

নিরাপত্তা বাহীনিগুলোর সূত্রে জানাযায়, গত পনের মাসে র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৬) এর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের ২০ জনকে আটক ও অর্ধকোটি টাকার মালামাল উদ্ধার করে। অপরদিকে গত ৯ মাসে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দায়িত্বরত আনসার ব্যাটালিয়ন খুলনার সদস্যরা ৩৩জন চোরকে গ্রেপ্তার করে। এসময় চোরাইকৃত ৫৩ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়।

কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য রয়েছেন ১৫০ জন, সাধারণ আনসার ৩০ জন, পুলিশ সদস্য ১৭ জন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভেল এর নিজস্ব সেন্ট্রি সিকিউরিটি সার্ভিসের কর্মী রয়েছে ৭৮ জন এবং জেরিন সিকিউরিটি সার্ভিসের রয়েছে ১৮জন । কোনো সংস্থাই কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একক ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত না হওয়ায় একদিকে যেমন জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে অপরদিকে দায়িত্ব স্পষ্ট না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।

উল্লেখ্য গত ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!