খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

রামপালে ৩ হাজার একর মৎস্য ঘের তলিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি

রামপাল প্রতিনিধি

যেদিকে চোখ যায়, সেদিকে শুধু পানি আর পানি। বাড়ীতে পানি, কৃষি জমিতে পানি, মসজিদে পানি! এক হাজার পরিবারের সুপেয় খাবার পানির সংকট। নারী, শিশু, বৃদ্ধরা পানি বন্দি। শুকনা জায়গার অভাব। স্যানিটেশন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। যাতায়াতের রাস্তাঘাট নেই। পুটিমারী নদীর উপর নির্মিত চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটিও জরাজীর্ণ। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ওই সাঁকো পার হয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের যেতে হয় স্কুলে। কারো অসুখ বিসুখ হলে বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও বৃদ্ধদের হাসপাতালে নেওয়ার উপযোগী কোন পথও নেই। উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের বর্ণি, গৌরম্ভা, শ্রীরম্ভা, মুড়লিয়া ও ছায়রাবাদের ৫ টি মৌজার প্রায় আড়াই হাজার একর জমি পানির নিচেয়। দুই হাজার ঘের মালিকেরা কয়েক কোটি টাকার মুল্যের মৎস্য চাষ করেছিলেন ওইসব জমিতে। কিন্তু সবই হারিয়ে এখন সবাই পথে বসেছেন।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর থেকেই এমনটি ঘটেছে উপজেলার ১ নং গৌরম্ভা ইউনিয়নের ছায়রাবাদ, বর্ণি, প্রসাদনগর, গৌরম্ভা, শ্রীরম্ভা ও কন্যাডুবি গ্রাম এবং এর আশপাশের এলাকা।

 

এলাকাবাসী ভুক্তভোগী মো. হাসান মল্লিক, সাবেক মেম্বর গোলাম মোস্তফা হাওলাদার, আবুল হাসান ফকির, আবুল খায়ের, রিয়াজ ও আরফিন গাজী জানান, ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে গৌরম্ভার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সরকারি কোন সহযোগীতা ছাড়াই গ্রামবাসী বেড়ি বাঁধ মেরামত করে গ্রাম ও মৎস্য ঘের রক্ষার চেষ্টা করেন। এভাবে প্রতি ১৫/২০ দিন অন্তর অন্তর বেড়ি বাঁধ ভাঙ্গে আর প্লাবিত হতে থাকে। কোন অবস্থায় বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি রোধ করা যাচ্ছেই না। এতে সম্পুর্ণভাবে হতাশ ও দিশেহারা হয়ে পড়েন তারা।

তারা আরও জানান, হাজার পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও জনসাধারণের যাতায়াতের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এর উপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। বিএস ঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সরকারি রাস্তাটি সম্পূর্ণভাবে বিলিন হয়ে গেছে। কোন সংস্কার করা হয় না। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। তীব্র খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষ অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন পার করছে। খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। এতটাই সমস্যা হলেও কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কোন কর্তাব্যক্তির কেহই দুর্গত এলাকায় যাননি। এই হলো অবস্থা !

গৌরম্ভার বিএনপি নেতা মাষ্টার মুজিবর রহমান জোয়ার্দার জানান, আপনারা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন, আমরা কেমন আছি। বিগত সরকারের সময় আমাদের উপর বিমাতা সুলভ আচরণ করা হয়েছে। সরকারের কর্মকর্তারা নজর না দিলে আমাদের ডুবতে হবে আর ভাসতে হবে। কোন উপায় না হলে এলাকা ছাড়তে হবে।

এ বিষয়ে গৌরম্ভা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রাজিব সরদারের ফোনে যোগাযোগ করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

কথা হয় রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরার সাথে। তিনি বলেন, আমি মঙ্গলবারেই কর্মকর্তা পাঠাবো। তারা সরেজমিনে গিয়ে দেখবেন। আমিও যাবো। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগীতার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!