চতুর্থবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। দশ বছর পর ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুবর্ণ সুযোগ ভারতের সামনে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২০১৪ সালের পর আবারও ফাইনাল খেলতে মরিয়া টিম ইন্ডিয়া।
গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে শুরু হবে নবম আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ম্যাচটি। প্রথম সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে নাম লেখিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়ে শিরোপা ঘরে তুলে ইংল্যান্ড। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল ইংলিশরা। এরপর ২০১৬ সালের আসরে ফাইনালে উঠলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৪ উইকেটে হেরে যায় ইংল্যান্ড। মূলত ম্যাচের শেষ ওভারে ক্রেইগ ব্র্যাথয়েটের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের সামনে হার মানে ইংলিশরা। শেষ ওভারে ১৯ রানের প্রয়োজনে ইংল্যান্ডের পেসার বেন স্টোকসের প্রথম চার বলে চার ছক্কায় ২৪ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শিরোপা এনে দেন ব্র্যাথওয়েট।
২০২২ সালে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ইংল্যান্ড। নিজেদের তৃতীয় ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারায় ইংলিশরা। তাই ২০১০, ২০১৬ ও ২০২২ সালের পর চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ইংল্যান্ডের সামনে।
এবারের বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যাবার শঙ্কায় ছিল তারা। কিন্তু ভাগ্যের জোরে গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকাতে পারে ইংলিশরা। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে বৃষ্টির কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে মহাবিপদে পড়ে তারা। পরের দুই ম্যাচ জিতে সুপার এইটে খেলার লড়াইয়ে ফিরে ইংল্যান্ড। ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট ছিল তাদের। একই অবস্থা ছিল স্কটল্যান্ডেরও। কিন্তু রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় ইংলিশরা।
সুপার এইটেও চাপে পড়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু নিজেদের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরে যাওয়ায় সেমির টিকিট পায় ইংলিশরা। তবে গ্রুপ পর্ব বা সুপার এইটের ম্যাচগুলো নিয়ে ভাবতে চান না ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বাটলার।
২০০৭ সালে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়েছিল তারা। এরপর ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। কিস্তু শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় টিম ইন্ডিয়া। ২০১৪ সালের পর আর কখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারেনি ভারত। দু’বার সেমিফাইনালে খেললেও ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। দশ বছর পর আবারও বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ভারতের সামনে।
২০২২ সালে বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিলো ভারতের। ইংলিশদের কাছে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছিল তারা। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান করে ভারত। জবাবে ৪ ওভার বাকি রেখে বিনা উইকেটে টার্গেট স্পর্শ করে ভারতকে হারের লজ্জায় ডুবায় ইংল্যান্ড।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ডকে পেয়েছে ভারত। আগের আসরে ইংল্যান্ডের কাছে হারের প্রতিশোধ নেয়ার দারুন সুযোগ এখন ভারতের সামনে।
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২৩ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-ইংল্যান্ড। এরমধ্যে ভারতের জয় ১২ ম্যাচে। ইংল্যান্ড জিতেছে ১১ ম্যাচে। বিশ্বকাপের মঞ্চে জয় ও হারের দিক দিয়ে মুখোমুখি দেখায় দু’দলই সমান-সমান। চারবারের দেখায় দুইটি করে জয় পেয়েছে ভারত ও ইংল্যান্ডের।
খুলনা গেজেট/এমএম