গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ছয়জন মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনায় চারজন, করোনার উপসর্গ নিয়ে একজন এবং করোনা নেগেটিভ হয়ে আরেকজন মারা গেছেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে তারা মারা যান। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে সাতজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটের অর্ধেক শয্যা খালি পড়ে রয়েছে। ৪১৮ শয্যার এই ইউনিটে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৯০ জন। রোগী কমতে শুরু করায় গত ২৩ আগস্ট ৪৯ শয্যার ৪ নম্বর এবং ৪৬ শয্যার ১ নম্বর ওয়ার্ড বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ১২টি ওয়ার্ডের অর্ধেক শয্যায় রোগী নেই। ২০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৮ জন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁর একজন করে প্রাণ হারিয়েছেন।
এ ছাড়া করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে নাটোরের একজন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। এ ছাড়া ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ডে একজন মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪১৮ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ১৯০ জন। এক দিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ২০৯ জন।
বর্তমানে রাজশাহীর ৯৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২২ জন, নাটোরের ২২ জন, নওগাঁর ১৩ জন, পাবনার ১৭ জন, কুষ্টিয়ার ১১ জন, জয়পুরহাটের তিনজন, চুয়াডাঙ্গার একজন এবং মেহেরপুরের একজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৯২ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৬৯ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ২৯ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২৯ জন।
এর আগে বুধবার (২৫ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ২৮ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৫৫৩ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬৫ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, নাটোরের ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, জয়পুরহাটের ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৩২৬ জন। এর মধ্যে করোনায় ১৪০ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১৫৪ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন।
এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
খুলনা গেজেট/এনএম