ঢাকার রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে আনুমানিক ৫৫ কোটি টাকা মূল্যমানের ইউরেনিয়াম উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
র্যাবের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পূর্ব রামপুরার একটি বাসায় তারা অভিযান চালায়। সেই সময় ওই বাসা থেকে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা মূল্যের ইউরেনিয়াম উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সময় তিনজন ইউরেনিয়াম ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ব্যাবকে জানিয়েছেন যে, তারা বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধভাবে ইউরেনিয়াম ক্রয় করে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা ইউরেনিয়াম ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন।
র্যাব-১০ এর উপ-অধিনায়ক মেজর শাহরিয়ার জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এখনো এই মামলাটির তদন্ত চলছে। তারা কোথা থেকে ইউরেনিয়াম কিনেছে, কাদের কাছে বিক্রি করতো, সেই পুরো চক্রটিকেই আমরা আটক করার চেষ্টা করছি।
তদন্তাধীন বিষয় বলে তিনি আর বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
চামড়ার যে বাক্সে ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে, সেটির গায়ে লেখা রয়েছে, ইউরেনিয়াম অ্যাটমিক এনার্জি মেটালিক এলিমেন্ট, অ্যাটমিক ওয়েট ২২২.০৭ (এ) ২ এলবি ল্যাবপ্রস। সেই সঙ্গে রিমোট কন্ট্রোল, ম্যানুয়াল বই, গ্যাস মাস্ক, ইলেকট্রিক মিটার, রাবারের ড্রপার, ইত্যাদি পাওয়া গেছে।
এর আগেও দেশে ইউরেনিয়াম বিক্রির অভিযোগে আটকের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালের অগাস্টে ঢাকায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইউরেনিয়াম বেচা-কেনার সাথে জড়িত এমন ১১ ব্যক্তিকে তারা গ্রেপ্তার করেছিল ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুই পাউন্ড ওজনের কথিত ইউরেনিয়ামও জব্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছিল।
ইউরেনিয়াম কী কাজে লাগে
ইউরেনিয়াম একপ্রকার খনিজ পদার্থ। কাজাখিস্তান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিজার, নামিবিয়া এবং রাশিয়ায় ইউরেনিয়াম বাণিজ্যিক ভিত্তিকে উত্তোলিত হয়।
অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোহাম্মদ আহসান বলেন, ”সাধারণত নির্দিষ্ট মানের ইউরেনিয়াম অস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগে। তবে সেজন্য অনেক অবকাঠামোর দরকার হয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কালোবাজারে ইউরেনিয়াম কেনাবেচার চেষ্টা করা হয়।”
তবে ইউরেনিয়ামের বিভিন্ন মান রয়েছে। সেই মান অনুযায়ী ইউরেনিয়াম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র অথবা পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া কিছু শিল্পেও ব্যবহৃত হয়।
তিনি জানান, র্যাব যে উদ্ধারের কথা বলছে, সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কী ইউরেনিয়াম, কোন মানের, কার্যকরি কিছু কিনা, সেটা বলা সম্ভব নয়।সূত্র : বিবিসি বাংলা।
খুলনা গেজেট/কেএম