রোজার সময় দৈনন্দিন রুটিনে বেশ পরিবর্তন আসে। পরিবারের সবার জন্য একসঙ্গে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা হয়, ফলে রান্নাঘরের কাজ বেড়ে যায়। তবে কিছু কাজ যদি আগে থেকে সেরে ফেলা যায় তবে রমজানের দিনগুলো অনেক স্বস্তিদায়ক হয়ে উঠে। ক্লান্তি ও অস্থিরতা থেকে খানিকটা মুক্ত থাকা যায়।
আজকের আলোচনায় থাকবে রমজানের আগাম কাজ গুছিয়ে রাখার বেশ কয়েকটি টিপস।
রান্নার প্রস্তুতি সহজ করা
ইফতারের জন্য কিছু আইটেম তৈরি করে ডিপ ফ্রিজে রাখতে পারেন। সমুচা, পাকোড়া, রোল, শামি কাবাব বানিয়ে ফ্রোজেন করে সংরক্ষণ করে রাখলে প্রতিদিন নতুন করে বানানোর ঝামেলা হবে না। বেশি করে পেঁয়াজ-আদা বাটা, মশলা তৈরি করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। তাছাড়া প্রতিদিন ছোলা সেদ্ধ করার ঝামেলা এড়াতে চাইলে বেশি করে সেদ্ধ করে রাখতে পারেন।
ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা
রমজানের সময় ক্লান্তির কারণে ঘরের বড় ধরনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা একটু কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আগে থেকে ঘরকে ধুলোমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া ভালো। কভার, পর্দা, কুশন, কার্পেটের মতো ভারী কাপড়গুলো এখনই পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। তাছাড়া ঘরের আসবাবপত্র, জানালা, দরজা, দেয়াল ডিপ ক্লিন করে নিতে পারেন রমজান শুরুর আগেই। রান্নাঘর ও ফ্রিজ দীর্ঘদিন ব্যবহারে তেল চিটচিটে হয়ে যায়। আগে থেকেই যদি ফ্রিজ, ওভেন, রান্না ঘরের তাপ চুলা ও সিঙ্ক ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেন তাহলে রোজার সময় স্বস্তি পাবেন। তাছাড়া যদি কোনো হোম অ্যাপ্লাইন্স যেমন ব্লেন্ডার, জুসার, ওয়াশিং মেশিন, ওভেনে ত্রুটি থাকে তা রোজার আগে ঠিক করে ফেলতে পারেন।
প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে রাখা
রমজানে বাজারে প্রচণ্ড ভিড় যেমন হয়, তেমনি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বেড়ে যায়। তাই আগেই প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে রাখলে অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হয়। চাল, ডাল, তেল, চিনি, মশলা, ছোলা, মুড়ির মতো উপকরণগুলো একটু বেশিই লাগে। রোজায় প্রতিদিন ইফতার ও সেহরির জন্য যেসব উপকরণ প্রয়োজন হতে পারে তার একটি তালিকা তৈরি করুন এবং সেই অনুযায়ী কিনে রাখতে পারেন।
স্বাস্থ্য ও ওষুধ সংক্রান্ত প্রস্তুতি
আপনি বা আপনার পরিবারের কোনো সদস্য যদি কোনো ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকেন তবে সেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোজার স্বাস্থ্য সচেতনতার পরিকল্পনা করে ফেলতে হবে আগেই। তাছাড়া যদি কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকে তাহলে রমজানের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধ, ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর খাবার আগে থেকেই গুছিয়ে রাখা ভালো।
ঈদের কেনাকাটা আগেই সেরে ফেলা
রোজা রেখে বা ইফতারের পর ঈদের শপিং করা খানিকটা কষ্টকরই বটে। এর ওপর শপিংমলে অতিরিক্ত ভিড় তো আছেই। তাই ঈদের পোশাক ও প্রয়োজনীয় কেনাকাটা চাইলে আগেই করে ফেলতে পারেন। বাজেটও তৈরি করে ফেলতে পারেন আগেভাগেই।
দৈনন্দিন রুটিন ঠিক করে নেওয়া
রমজানে ঘুমের রুটিন পরিবর্তন হয়। তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করা জরুরি। ইফতার ও সেহরির সময় অনুযায়ী ঘুম, নামাজ, অফিস ও কাজের কর্মসূচি আগেই ঠিক করে নিতে পারেন। যারা ছোট বাচ্চার বাবা-মা, তারা বাচ্চাদের রুটিন আগে সাজিয়ে নিন। যাতে করে ইফতার, সেহেরি ও পড়াশোনার সময় বের করা সহজ হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম