খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আজারবাইজানে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

রবি ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস আজ

গেজেট ডেস্ক

বাইশে শ্রাবণ আজ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। ৮০ বছর আগে ইংরেজি ১৯৪১ সালের ৬ আগস্ট বাংলা ১৩৪৮ সনের এইদিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির শ্যামল প্রাঙ্গণে বাংলা সাহিত্য ও কাব্যগীতির শ্রেষ্ঠ রূপকার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরলোকগমন করেছিলেন।

যদিও রবীন্দ্রনাথ জন্ম-মৃত্যুর মাঝে তফাত দেখেছেন খুব সামান্যই। সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয়, সে কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি বলেছিলেন, ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের মূল্য দিতে হয়/সে প্রাণ অমৃতলোকে/ মৃত্যুকে করে জয়।’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ যখন ইহধাম ত্যাগ করেন সেদিন শোকার্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম শ্রদ্ধা নিবেদন করে লিখেছিলেন, ‘দুপুরের রবি পড়িয়াছে ঢলে অস্তপারে কোলে/ বাংলার কবি শ্যাম বাংলার হৃদয়ের ছবি তুমি চলে যাবে বলে/ শ্রাবণের মেঘ ছুটে এলো দলে দলে।’ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনেক কিছুরই প্রথম স্রষ্টা তিনি। তার পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়েছে বাংলার শিল্প-সাহিত্য। তার হাত ধরেই বাংলা সাহিত্য লাভ করেছে নতুন রূপ।

বাংলা গদ্যের আধুনিকায়নের পথিকৃৎ রবিঠাকুর ছোটগল্পেরও জনক। গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, প্রবন্ধে, নতুন নতুন সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া নিবন্ধে, এমনকি চিত্রকলায়ও রবীন্দ্রনাথ চিরনবীন-চির অমর। রবীন্দ্রনাথ একজন দার্শনিকও বটে। তার ধর্মীয় ও দার্শনিক চিন্তা-চেতনা শুধু নিজের শান্তি বা নিজের আত্মার মুক্তির জন্য ধর্ম নয়। মানুষের কল্যাণের জন্য যে সাধনা তাই ছিল তার ধর্ম। তার দর্শন ছিল মানুষের মুক্তির দর্শন। মানবতাবাদী এই কবি বিশ্বাস করতেন, বিশ্বমানবতায়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শন অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, সাহিত্যের অন্যান্য শাখার লেখনী মানুষকে আজও সেই অন্বেষণের পথে, উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে।

রবীন্দ্রনাথ আজও আমাদের মনমানসিকতা গঠনের, চেতনার উন্মেষের প্রধান অবলম্বন। আমাদের জীবনের এমন কোনো বিষয় নেই, যেখানে আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পাই না। তার রচনাবলী আমাদের প্রেরণার শিখা হয়ে পথ দেখায়। বাংলা সাহিত্যকে তিনি বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনিই একমাত্র কবি, যিনি তিনটি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা (বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা)। জীবনের শেষ পর্যায়ে চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন তিনি।

তিনি একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্য সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। তার ১৯১৫টি গান অন্তর্ভুক্ত হয়েছে গীতবিতানে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!