খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৪
  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

যে শহরের সব বাসিন্দা উড়োজাহাজের মালিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শহরকে দুই ভাগে ভাগ করে রানওয়ে এসে মিশেছে যে রাস্তায় সেই পথটি ১০০ ফুট প্রশস্ত। অনায়াসে ওঠানামা করতে পারে প্লেন। এমনকি ব্যস্ত রাস্তায় চলন্ত গাড়িকে পাশ কাটিয়ে এগিয়েও যেতে পারে বিনা বাধায়।

শহরের নাম ক্যামেরন পার্ক। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার এই শহরে যারা থাকেন, তারা অফিস যান প্লেনে চড়ে। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতেও বেড়িয়ে পড়েন প্লেন নিয়েই।

সরকারি নথিতে অবশ্য ক্যামেরন পার্ক শহর নয়। আদতে একটি ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি। এই ধরনের কমিউনিটি মূলত বিমানঘাঁটিতেই গড়ে ওঠে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে অসংখ্য বিমানঘাঁটি অকেজো হয়ে পড়ে।। একইসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকের সংখ্যাও বাড়ছিল।

সংখ্যাটি ১৯৩৯ সালে ৩৪ হাজার থেকে বেড়ে ১৯৪৬ সালে চার লাখে গিয়ে ঠেকে। যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের আরামের অবসর দিতেই ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আমেরিকার অসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ ঠিক করে, অকেজো বিমানঘাঁটিগুলোতেই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। চেনা পরিচিত পরিবেশে থাকতে বিমানচালকদের ভালো লাগবে, এই ধারণা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

১৯৬৩ সালে সেই ভাবনা থেকেই তৈরি ক্যামেরন পার্ক। এক সময়ে নাম ছিল ক্যামেরন পার্ক এয়ারপোর্ট। সেই নাম বদলে হয় ক্যামেরন পার্ক এয়ারপার্ক। শহরের প্রতিটি পরিবারেরই কোনও না কোনও সদস্য এক সময়ে বিমানচালক ছিলেন।

বিশ্বে এমন ফ্লাই-ইন-কমিউনিটি রয়েছে ৬৪০টি। তার মধ্যে ৬১০টিই আমেরিকায়। তবে বৈশিষ্ট্যে ক্যামেরন পার্ক তার মধ্যে সবচেয়ে নিখুঁত বলে মনে করা হয়।

আর পাঁচটা শহরে বাস-ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ি যেভাবে চলে, এ শহরে প্লেনও চলে সেই ভাবে। গাড়ির গ্যারাজের মতোই প্লেন রাখার জায়গা বা হ্যাঙ্গার রয়েছে ঘরে ঘরে। রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডগুলো অনেকটাই নিচু। প্লেনের ডানা লেগে নষ্ট না হয়ে যায়, তার জন্যই অতিরিক্ত সাবধানতা। এমনকি রাস্তার নামও ‘বোয়িং রোড’।

পুরনো আমলের ঐতিহ্যবাহী গাড়ির প্রদর্শনীর প্রচলন আছে বিশ্বের বহু শহরে। ক্যামেরন পার্কে গাড়ির পাশাপাশি প্লেনেরও প্রদর্শনী হয়। বছরে এক দিন রানওয়ে বরাবর সারি ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বিভিন্ন মডেলের উড়োজাহাজ। রানওয়ে ধরে একসঙ্গে সেই সব উড়োজাহাজের উড়ান নেওয়ার দৃশ্যও দেখার মতো। মাত্র ১২৪টি বাড়ি রয়েছে এই শহরে। তার মধ্যে ২০টি বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

সেসব বাড়িও খুব অল্প দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন মালিকরা। ফেব্রুয়ারি মাসেই এমন একটি বাড়ির বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যে আসে। ইন্টারনেটে দেওয়া সেই বিজ্ঞাপনে উড়োজাহাজের হ্যাঙ্গারসহ সেই বাড়িটির দাম চাওয়া হয়েছিল মাত্র ছয় লাখ ৮৫ হাজার ডলার।

তবে ক্যামেরন পার্কের অধিকাংশ বাসিন্দা আরামেই আছেন। ছোট ‘শহর’এ সুবিধার কমতি নেই। স্কুল, বাজার, হাসপাতাল, এমনকি শপিং মলও রয়েছে। আর যদি কিছু না পাওয়া যায় তাহলেই বা চিন্তা কেন! প্লেনে চড়ে কাছের শহরে চলে যাওয়া তো কয়েক মিনিটের কাজ!

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!