যে আঙিনা সবসময় মুখরিত থাকে ধর্মপ্রাণ মানুষ আর সৌন্দর্যপিপাসুদের আনাগোনায়, সেই সিলেট-সুনামগঞ্জ আজ বিপর্যস্ত স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায়। চরম এই বিপদে দুর্ভোগে পড়া মানুষদের সমব্যথী আমরাও।
জানি, বাস্তবতা অনেক কঠিন। তবু ধৈর্য রেখে হাল না ছেড়ে চালিয়ে যেতে হবে জীবনের লড়াই। এই সময়গুলোতেই প্রমাণ করতে হয় যে ‘মানুষ মানুষের জন্য।’ সবাই যে যতটা পারি, আমরা যেন দুর্গতদের পাশে থাকি ও সহায়তা করি। মহান আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদেরকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করবেন দ্রুত।
এভাবে বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এমপি।
শনিবার রাতে তার ভিরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি দেশবাসীর কাছে এই আহবান জানান।
শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে- দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণাসহ ১১ জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস অংশে বলা হয়, সুরমা ব্যতিত দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কতিপয় স্থানে মাঝারি থেকে ভারী, কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
এ সময়ে তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি অথবা উপরে অবস্থান করতে পারে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে কী বলা হয়েছে
সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) ২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী দুদিন বৃষ্টিপাতের এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
শনিবার আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের সই করা এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজ (শনিবার) বিকেল ৫টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও প্রবল বজ্রপাতসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (৮৯ মি.মি. বা তার অধিক) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।