সমালোচনা থাকলেও এবারও বাজেটে থাকছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে যে কেউ বৈধ করতে পারবেন অপ্রদর্শিত জমি, ফ্ল্যাট কিংবা নগদ টাকা। শুধু তাই নয়, কর বসছে ফ্রিজ, এসি কিংবা পানির ফিল্টারের মতো অত্যন্ত দরকারি সব পণ্যে। চড়া মূল্যস্ফীতির এই সময়েও ছাড় মিলছে না করমুক্ত আয়ের সীমায়।
সঙ্গত কারণেই, বাজেট নিয়ে এবার খুব বেশি কাটাছেঁড়া করার সুযোগ পাচ্ছেন না অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। কারণ, একদিকে টাকার সঙ্কট, অন্যদিকে লাইনচ্যুত হওয়া অর্থনীতিকে পথে আনার চেষ্টা। তবু জীবনের প্রথম বাজেট স্মরণীয় কিংবা আলোচনার কেন্দ্রে রাখতে আনছেন বেশকিছু পরিবর্তন।
বরাবরই তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়া কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এবার আরো বিস্তৃত করছেন অর্থমন্ত্রী। আগে এই সুযোগ কেবল জমি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে থাকলেও, নতুন বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে, বৈধ করা যাবে নগদ অর্থও।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, সংবিধানে লিখা আছে রাষ্ট্র এমন অবস্থা নিশ্চিত করবে, যেনো কেউ অনুপার্জিত অর্থ ভোগ না করতে পারে। এখন কাউকে যদি বলা হয়, অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ তুমি এভাবে বিনিয়োগ করো। এতে কর কম নেয়া হবে। তোমাকে কোনো প্রশ্ন করবো না। তার মানে তাকে প্রশ্রয় দেয়া হলো।
তীব্র গরমে এক রকম মৌলিক চাহিদার পর্যায়ে চলে যাওয়া, এসি, রেফ্রিজারেটরের কাঁচামাল আমদানিতে থাকা শুল্ক বাড়িয়ে ১৫ শতাংশের প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন তিনি। ফলে ২০২৬ সালের পর এসব পণ্য কিনতে ব্যয় বাড়বে ভোক্তাদের। এমনকি, আরেক দরকারি পণ্য পানির ফিল্টারে কর বসিয়ে চিন্তা বাড়াচ্ছেন নিরাপদ পানি পান নিয়ে। একই সঙ্গে ১০ শতাংশ কর ধার্য করে এলইডি বাতির উৎপাদন ব্যয় বাড়ানোর ইঙ্গিত থাকছে আসছে বাজেটে।
নতুন বাজেটে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের ব্যয় কিছুটা কমিয়ে স্বস্তি দেয়ার কথা ভাবছেন অর্থমন্ত্রী। এই খাতের প্রধান দুই উপকরণ, ফিল্টার এবং সার্কিটে থাকা ১০ শতাংশের আমদানি শুল্ক নামিয়ে আনছেন ১ শতাংশে।
দেশে বর্তমানে মোটর সাইকেল শিল্পের বিকাশ ধারা অব্যাহত রাখতে যন্ত্রপাতি বা ইঞ্জিন আমদানির ওপর থাকা শুল্ক প্রত্যাহার করতে যাচ্ছেন তিনি। তবে কিছু ব্যয় বাড়াচ্ছেন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কের উন্নয়নে ব্যবহৃত পণ্য-সামগ্রীতে।
ব্যক্তি পর্যায়ে কর আদায় ও প্রয়োজনে অব্যাহতির মাধ্যমে বৈষম্য কমানোর কথা বলা হলেও, এবার সে পথে হাঁটছেন না অর্থমন্ত্রী। কারণ, দীর্ঘ সময়ের চড়া মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও করমুক্ত আয়ের সীমা রেখেছেন আগের সাড়ে তিন লাখ কোটিতেই। অন্যদিকে, হাত দেননি ধনীদের সম্পদের ওপর থাকা সারচার্জ বা অধিশুল্কের হারে।
খুলনা গেজেট/কেডি