যশোরে যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ আলী হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী সন্ত্রাসী নবাব হোসেনের শ্বশুর বাড়ির পাশ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলিসহ রাইফেল উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের শ্বশুর আবু সফিয়ানের বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত একতলা ভবনের ভেতর থেকে ওই অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, আলী হত্যার ঘটনায় শনিবার মধ্যরাতে কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল। নিহতের মা মঞ্জুয়ারা বেগম মামলাটির আবেদন করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক।
তবে মামলায় কতজনকে আসামী করা হয়েছে তা না জানা গেলেও একটি সূত্র জানিয়েছে আটজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলার কিসমত নওয়াপাড়া গ্রামের নবাব হোসেন ও সিরাজ হোসেন, পাঁচবাড়িয়া স্কুলপাড়ার ইকরামুল, বাহাদুরপুর পশ্চিমপাড়ার টোকন, শহরের পালবাড়ির রবিউল ইসলাম রবি, ছোট বালিয়াডাঙ্গার সজল আল মামুন সোহেল, চাঁচড়া ভাতুড়িয়ার নারায়ণপুর গ্রামের ইসরাজুল এবং কিসমত নওয়াপাড়ার এনামুল।
নিহতের মায়ের দাবি, আলী হোসেন মাটি, বালি ও পুরনো গাড়ির ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৫ জুন সদর উপজেলার নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় ই ব্লক রাস্তার পাশে ৬ জুন রাতে খাওয়া দাওয়া হয়। আলী হোসেন ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একই এলাকার সোহান ও নয়নকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সোয়া ১২টার দিকে তেঁতুলতলা নামক স্থানে পৌঁছালে আসামীরা পেছন থেকে তাকে ধাওয়া করে। প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র-গুলি ছিল। তারা আলীকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার ছেলে মারা যায়। পরে আলী হোসেনকে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ মামলার বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, নিহতের মা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রাতে মামলা রেকর্ড করা হবে। তবে তিনি আসামিদের নাম ঠিকানা জানাতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েছে, কিন্তু তারা আসলে জড়িত কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ শনিবার রাতে মামলা রেকর্ড করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে, শনিবার রাত ৯ টার দিকে আলী হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নবাবকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় বাহাদুরপুরে তার শ্বশুর বাড়ির পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি রাইফেল ও ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল জুয়েল ইমরান সাংবাদিকদের জানান, যুবলীগ কর্মী আলী হোসেন হত্যার ঘটনার পর ওই এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালানো হয়। গোপন সূত্রে তারা জানতে পারেন, নবাবের শ্বশুর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে অস্ত্র গুলি রয়েছে। তারা অভিযান চালিয়ে একটি টু টু বোরের রাইফেল ও ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, আলী হোসেন হত্যার সাথে ওই অস্ত্র-গুলির সম্পর্ক আছে কি-না বা ওই অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া আলী হোসেন হত্যার সাথে জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএম