খুলনার দৌলতপুর থানার সাবেক যুবদলের সহ-সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সজলকে দু’দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৩ জুলাই) সাত দিনের আবেদন করে প্রেরণ করলে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক মো: ফরিদুজ্জামান তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে শনিবার গভীর রাতে সজলকে দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন
আদালতের সূত্র জানায়, দৌলতপুর থানা পুলিশ সজলকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করলে মেট্রেপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৪ এর আদালতের বিচারক তার দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রোববার বিকেলে তাকে দৌলতপুর থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। এদিন থেকে তার রিমান্ড কার্যকর করবে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা করিম মোল্লার ছেলে এবং থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি নিজ বাড়ির সামনে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার পরিস্কার করছিলেন। এ সময়ে সহযোগী হিসেবে ভ্যান চালক মো: সোলায়মান ছিল। একটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন যুবক বারবার ওই রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করছিল। বিষয়টি গ্রাহ্য না করে গাড়ি পরিস্কারের কাজে ব্যস্ত ছিল মাহবুব। সময়টি শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় হওয়া তখন রাস্তায় কেউ ছিল না। এ সুযোগে ওই গাড়িতে থাকা তিন সন্ত্রাসী তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। দু’টি গুলি তার মাথায় এবং মুখে লাগে। এ সময়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তারা মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাহবুবের দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। পরবর্তীতে তারা তেলিগাতি রাস্তা দিয়ে হাইওয়ে রোডে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যায়।
পুুলিশ ঘটনাস্থল এবং তার আশপাশের বাড়ির ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে শনিবার গভীর রাতে সজলকে মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে। সজল মাহবুব মোল্লার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে দুর্বৃত্তদের খবর দেয়। সে তথ্যের ভিত্তিতে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি এবং পায়ের রগ কেটে হত্যা করে।
আরও পড়ুন
- মাহাবুব হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা
- নিহত যুবদল নেতা মাহবুবের বাড়িতে শোকের মাতম, অভিযানে পুলিশের একাধিক টিম
- দৌলতপুরে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী বলেন, কিলিং মিশনে তার অংশগ্রহণ ছিল না। কিন্তু মাহাবুবের অবস্থান সম্পর্কে খুনীদের যাবতীয় তথ্য দিয়েছে সজল। তার তথ্যের ওপর নির্ভর করে দুর্বৃত্তরা মাহবুবকে নির্মমভাবে গুলি এবং পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সজল অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তদন্তের সার্থে তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) তাজুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকান্ডে সজল সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। আমরা এ তথ্য নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছি। শুধু এ হত্যাকান্ড নয় সে গোপন সংগঠনের তথ্য সরবরাহ করে থাকে। হত্যাকান্ডের সময়ে সজল খুব কাছাকাছি থেকে দুর্বৃত্তদের খবর আদান প্রদান করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়া হবে। তার কাছ থেকে আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব এবং মূল খুনীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
খুলনা গেজেট/সাগর/এমএম