যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে পারছে না বাংলাদেশ। ফলে জমে যাচ্ছে রূপপুর প্রকল্পের ঋণের সুদের বকেয়া, যা থেকে তৈরি হচ্ছে নতুন জরিমানা। এমন অবস্থায় সুদের অর্থ নতুন প্রকল্প বা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। যদিও তা যুৎসই মনে করছেন না অর্থনীতিবিদরা।
এককভাবে বিদেশি ঋণের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র। যাতে ভর করে পারমাণবিক বিদ্যুতের খাতায় নাম লেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে বিপত্তি রাশিয়ার ঋণ নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ান ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে পারছে না বাংলাদেশ। ফলে পরিশোধ করা যাচ্ছে না ঋণের কিস্তি। এতে বকেয়া সুদ, কমিটমেন্ট ফি আর বিলম্ব জরিমানা নিয়ে জমে গেছে প্রায় ৫৮৭ মিলিয়ন ডলার। যা থেকে আসছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারের নতুন জরিমানা। এমন অবস্থায় এই অর্থ পরিশোধ নিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা ইনভেস্ট করতে পারি কিন্তু একটা সময় তো সেই অর্থ আমাদের ফেরত দিতে হবে, সেই পথটা আমরা এখনও জানি না এটা একটা সমস্যা। আরেকটি বিষয় হতে পারতো যে আরেকটি প্রজেক্টে ইনভেস্ট করলে আর সেটি যদি রাশিয়া গ্রান্ড হিসেবে দেয় আর যদি এটা ফেরত না দিতে হতো তাহলে সেটি একটি মেকানিজম হতে পারে।
এমন অবস্থায় দেশটির কাছে বাংলাদেশের নতুন প্রস্তাব, বকেয়া ওই অর্থ বাংলাদেশে নতুন প্রকল্প বা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ। কিংবা রাশিয়া আমদানি করতে পারে সেই অর্থের সমপরিমাণের পণ্যও। এ বিষয়ে রাশিয়ার মন্তব্য আসতে পারে ইআরডির সঙ্গে আগামী বৈঠকে। তবে তা কতটুকু স্বস্তি দিবে বাংলাদেশকে তা নিয়ে রয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার বলেন, রাশিয়া যদি এমন প্রস্তাব দেয় তাহলে আমি এটাকে ভালো হিসেবে বিবেচনা করছি। তবে ঋণের সুদের রেটটা একটু বেশি।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যেই ঋণগুলো আমরা স্থগিত করছি তার ওপর দণ্ডসুদ দিতে হবে। এর জন্য আরও মূল্য বাড়তে থাকবে। এই সব অনাদায়ী ঋণগুলো আমাদের দেশের হিসাব-নিকাশে থেকে যাবে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, সাহায্যদাতা এবং ক্রেতারা দেখতে পাবেন যে আমরা ঋণের ভাড়াক্রান্ত অবস্থায় আছি।
রূপপুর প্রকল্পে সুদ পরিশোধ ছাড়াও ঋণের প্রথম কিস্তির সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের সময় ২০২৭ সালের ২০২৯ পর্যন্ত বৃদ্ধির আবেদনও করেছে বাংলাদেশ।
খুলনা গেজেট /কেডি