যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ট্রিপল মার্ডার মামলায় আটক পাঁচ কর্মকর্তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর গঠিত যশোরের তদন্ত কমিটি। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে আটক আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিন সদস্য। এদিকে, একই মামলার বাকি ৮ আসামির রিমান্ড আবেদনের শুনানী আগামি ২৫ আগস্ট ধার্য করেছে আদালত।
সমাজসেবা অধিদপ্তর গঠিত তদন্ত টিমের প্রধান যশোরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু লাইছ জানান, রোববার তারা জেলগেটে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। বর্ধিত সাতদিনের মধ্যেই তারা তদন্ত রিপোর্ট সমাজসেবা অধিদফতরে জমা দেবেন। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। এসময় কমিটির অন্য দুইজন সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল গোলাম রাব্বানী এবং সমাজসেবা অধিদফতর যশোরের উপ-পরিচালক আসীত কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।
ট্রিপল মার্ডারে অভিযুক্ত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তা হলেন, তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারি তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, কারিগরি প্রশিক্ষক (ওয়েল্ডিং) ওমর ফারুক, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম ও সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান। মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় প্রত্যেকেই ইতোমধ্যে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।
এদিকে আদালত সূত্র জানায়, যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র তিন কিশোর হত্যা মামলায় আটক কেন্দ্রের আট কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের চাওয়া সাতদিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানী আগামি ২৫ আগস্ট ধার্য করেছে আদালত। রোববার রিমান্ড আবেদন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসার আদালতে উপস্থাপন করলে তিনি ২৫ আগস্ট দিন ধার্য করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের হেফাজত চেয়ে যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দিন হোসাইনের আদালতে আবেদন দাখিল করেন।
আটক শিশু অপরাধীরা হলো, কুড়িগ্রামের রিফাত আহমেদ, গাইবান্ধার খালিদুর রহমান তুহিন, নাটোরের হুমাইদ হোসেন ও মোহাম্মদ আলী, পাবনার ইমরান হোসেন ও মনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর পলাশ ওরফে শিমুল ও চুয়াডাঙ্গার আনিছুজ্জামান।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রোকিবুজ্জামান জানান, মামলার তদন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। পাঁচ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া আটক কিশোরদেরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। এ কারণে তিনি আদালতে আবেদন করেছেন, এখন আদেশের অপেক্ষায় আছেন।
উল্লেখ্য, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৩ আগস্ট দুপুর থেকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৮ বন্দির উপর নির্যাতন চালানো হয়। এতে তিন বন্দি কিশোর নিহত হয়। এছাড়া আহত ১৫ জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। পরে এ ঘটনায় নিহত এক কিশোরের বাবা কোতয়ালী থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে বেড়িয়ে আসে থলের বেড়াল। হত্যায় জড়িত অভিযোগে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। পরে আদালতে ঘটনার ৫ স্বাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহন করা হয়। এরপর ঘটনার সাথে জড়িত আট কিশোরকে শ্যোন এ্যারেস্ট দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট / এমএম