যশোর প্রধান ডাকঘরের সাবেক পোস্টমাস্টার দুর্নীতিবাজ আব্দুল বাকী স্বপনের ব্যাংক ও পোস্ট অফিসের আর্থিক লেনদেন (ফ্রিজ) জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তার স্ত্রী আফরোজা সুলতানার হিসাবও স্থগিত করা হয়েছে। দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলামের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার সিনিয়র স্পেশাল জজ শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন।
পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রধান ডাকঘরের প্রায় দু’ কোটি টাকা আত্মসাত মামলায় আটক সাবেক পোস্টমাস্টার আব্দুল বাকী স্বপনের ব্র্যাক ব্যাংক যশোর শাখার হিসাবে ৪০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করা রয়েছে। যা দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে। শুধু তাই না, তার স্ত্রী আফরোজা সুলতানার নামেও প্রধান ডাকঘরের হিসাবে আরও দু’ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে বলে দুদক তদন্তে জানতে পেরেছে।
তিনি জানান, ব্র্যাক ব্যাংকে তার নামে থাকা একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে জেলে থাকা অবস্থায় এটিএম কার্ড ব্যবহার করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি দু’ লাখ ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। বর্তমানে ওই অ্যাকাউন্টে ৬৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে। এসব বিষয় তদন্তে উঠে আসায় এ তিনটি হিসাব স্থগিতের আবেদন করা হলে সোমবার বিচারক আদেশ মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি শেখ মোহাম্মদ আলী নামে এক আমানতকারীর হিসেব বই দিয়ে জালিয়াতি করে ১৩ লাখ টাকা উঠানোর চেষ্টার সময় ডিপিএম মেহেরুন্নেছার কাছে ধরা পড়ে বাকীর জালিয়াতির কারবার। এরপরে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে এক কোটি ৭৮ লাখ পাঁচ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় আব্দুল বাকী বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। এ বিষয়ে ডাক বিভাগ পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
এছাড়া বাকীর ঘনিষ্ট সহকারী প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার অপারেটর আক্কাস সিকদার ও পোস্টাল অপারেটর করিমুল্লাহর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। এ তিনজনকে অভিযুক্ত করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে ডাক অধিদপ্তরে। অন্যদিকে এ মামলায় দুদক তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, তাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তারা যাচাই বাছাই করছেন। মামলা সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম