যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে গোলযোগ হয়েছে। এ সময় ওই ব্যক্তির হামলায় দু’জন কর্মচারী আহত হন। আটক করা হয় পাঁচ শিক্ষার্থীকে। যদিও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে পরে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা (জেলা নাজির) মহিবুল আকতার জানান, বুধবার (২১ মে) দুপুরে অফিসের দোতলায় একজন ব্যক্তি উচ্চস্বরে চিৎকার করছিলেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারী আবুল হাসান ও বাবুল হোসেন তাকে শান্ত হতে বললে তিনি নিষেধ অমান্য করে চিৎকার চালিয়ে যান। বাধা দিতে গেলে ওই ব্যক্তি তার হাতের ক্রাচ দিয়ে দুই কর্মচারীকে এলোপাতাড়ি মারধর ও কিলঘুষি মারতে শুরু করেন।
এ ঘটনার পরই সেখানে উপস্থিত স্কুল-কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী কোনো কিছু না বুঝেই ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে কর্মচারীদের ওপর চড়াও হন। তারা কর্মচারীদের ধরে চড়-থাপ্পড় মারেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন শিক্ষার্থীদের আরেকটি দল বাঁশ নিয়ে নাজিরখানায় আক্রমণ করার চেষ্টা করে।
এসময় অন্য কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে আটক করেন এবং তাদের নাজিরখানায় বসিয়ে রাখেন। পরে জেলা প্রশাসকের পরামর্শে তাদের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়।
আহত কর্মচারী আবুল হাসান জানান, ওই ব্যক্তি দুষ্টু প্রকৃতির মনে হয়েছে। সে আসলেই শারীরিক প্রতিবন্ধী কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি আরও বলেন, যখন তাকে চিৎকার করতে নিষেধ করা হয়, তখন তিনি স্বাভাবিক মানুষের মতো দুই পায়ে দাঁড়িয়ে ক্রাচ দিয়ে তাদের মারধর করে। বাবুল হোসেনের কপালে ঘুষি মারা হয়েছে এবং আবুল হাসানের বাম হাতের একটি আঙুল কামড়ে দিয়েছে ওই ব্যক্তি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম। তিনি শহরের চাঁচড়া রায়পাড়ার খোরশেদ আলমের ছেলে। তিনি মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত।
আটক পাঁচ শিক্ষার্থী হলো, নাজমুস সাকিব, নাসির হোসেন, শামীম হোসেন, নাসিম হোসেন এবং আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে ক্ষমা করে দেওয়ায় তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাটি একটি ছোট বিষয় থেকে কীভাবে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলায় পরিণত হতে পারে, তার একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস