বৃষ্টি হলে কাঁদা আর রোদ হলে ধুলা। সড়কটি পাকা হলেও দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে, এটি পাকা সড়ক। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে পরিবহণ ও ভারী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবহন চলাচল করে থাকে। প্রতিদিন শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এ পথে বিভিন্ন গন্তব্যে যায়। ট্রাকে- ট্রলিতে করে নেয়া মাটি ও বালি রাস্তার উপরে পড়ে কাঁদা-মাটিতে একাকার হয়ে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। তাই সড়কে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যশোর-খুলনা মহাসড়কের অভয়নগর অংশ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের অভয়নগর অংশে এখন বিভিন্নস্থানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে উপজেলার প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ির র্দীঘ লাইন পড়ে। সড়কে গর্তের কারণে জমে গেছে পানি। যার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পড়ছে যানবাহন। কয়েকজন ট্রাক ড্রাইভার জানিয়েছেন প্রতিদিনই ২/৩ টা গাড়ি পাল্টি খায়। জাহিদুল ইসলাম নামের একজন ড্রাইভার জানান, মঙ্গলবার ভোর তিনটার সময় এসেছি প্রায় তেরো ঘন্টা অপেক্ষা করেও এখনো পর্যন্ত এই এক কিলোমিটার রাস্তা পার হতে পারিনি। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই। তা না হলে খুব শীঘ্রই সমস্যা আরো তীব্র হবে।
স্থানীয়রা জানান, সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন মোটরসাইকেল ও ছোট ছোট গাড়ির চালকরা। পাকা রাস্তার উপর ভেজা কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে সৃষ্টি হয় এক মরণ ফাঁদ। রাস্তা দিয়ে গাড়িতে চলাচল ও হেঁটে পথ পাড়ি দিতে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে ইটভাটার মালিক ও বালি-মাটি ব্যবসায়ীদের লাইন্সেবিহীন ট্রাক্টর, ডাম্পার ট্রাক, ট্রলি নিয়মিত মাটি ও বালি বহন করে থাকে। এই ট্রলি ও ট্রাক থেকে বালি-মাটি পড়ে রাস্তার বেহাল দশার সৃষ্টি হয়। এই মাটি রোদের সময় ধুলা আর বৃষ্টির সময় পিচ্ছিল কাঁদায় পরিণত হয়। মেহেদি নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। ধুলায় কোন কিছুই দেখা যায় না। আবার বর্তমানে কাঁদার কারনে রাস্তায় চলাচলে অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। পরিবহন চালক রমজান আলী বলেন, বছর জুড়েই এই রাস্তায় চলাচল করতে দুভোর্গ পোহাতে হয়। বর্ষা হলেই চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ে আবার বর্ষা গেলে ধুলায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়তই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। পরিবহন যাত্রী অনিক অধিকারী বলেন, যশোর-খুলনা মহাসড়কের অভয়নগর অংশ এখন যেন মরণফাঁদ। ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। যাত্রী সাধারণ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়িত। নওয়াপাড়া থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি চেঙ্গুটিয়া উড়োতলা নামক স্থানে পৌছালে সড়কের বেহাল দশা ও জ্যামের কারনে ২ ঘন্টা গাড়ির ভিতর বসে আছি।
এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে ওই এলাকার সড়কে যানবহন যাতায়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কয়েকটি গাড়ি নষ্ট হওয়ার কারণে রাস্তা ব্লক হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের টিম ২৪ ঘন্টা মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ বলেন, এ ব্যাপরে রাস্তার কন্ট্রাক্টরকে ডাকা হয়েছিল তাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ভারী বর্ষণের কারণে কাজে বিলম্ব হলেও কাজ শুরু হবে এবং আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
খুলনা গেজেট/এসএস