যশোরে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। একটি হয়েছে কোতোয়ালি থানায় ও অপরটি বাঘারপাড়া থানায়। কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় ৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে আটটি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
এছাড়া, বাঘারপাড়ায় দায়ের করা মামলায় ৪২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার ১৬ আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। এ মামলায় চারটি জিআই পাইপ, ৬টি রড, দুটি শাবল, ২২টি কাঠের বাট ও দুটি হাতুড়ি উদ্ধার দেখিয়েছে পুলিশ।
যশোর কোতোয়ালি থানার এসআই মহিউদ্দিন মামলায় উল্লেখ করেন, শুক্রবার রাতে ডিউটিরত অবস্থায় তিনি জানতে পারেন সদর উপজেলার রামনগরের নামেজ সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে কতিপয় বিএনপি ও জামাত শিবিরের নেতাকর্মীরা নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তারা সেখানে বোমাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে অবস্থান করছে। তাৎক্ষনিক তিনি ও তার টিম রাত ১২টা ১০ মিনিটে ওই এলাকায় অভিযান চালান। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নেতাকর্মীরা ছোটাছুটি শুরু করে অনেকেই পালিয়ে যান। তারমধ্যে ১৪ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে তাজামুল ইসলামের কাছ থেকে চারটি ও মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে আরও চারটি মোট আটটি হাত বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি ৪৯ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
আটককৃত অন্যরা হলেন, নুরপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার, ললিতাদাহের আমির হোসেন, একই গ্রামের হোসেন, শাখারীগাতির আকবর হুসাইন, শফিউল্লাহ, জগহাটি গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেন, রুপদিয়ার হাবিবুল্লাহ, নরেন্দ্রপুরের রাশেদুল ইসলাম, মণিরামপুর উপজেলার সন্ন্যাসগাছার আব্দুল জলিল, কেশবপুর উপজেলার লক্ষীনাথকাটির বেলাল হোসেন, সাতবাড়িয়া গ্রামের আবুল হোসেন, খোপদহি গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন।
এছাড়া, বাঘারপাড়ার থানার এসআই সজল কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা করেছেন। এ মামলায় বাদী বলেছেন, শুক্রবার বিকেলে তারা খবর পান বাঘাপাড়ার মাহমুদপুর প্রাইমারি স্কুলের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা নাশকতামুলক কর্মকান্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাৎক্ষনিক পুলিশের একটি টিম ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে আটক করে। তারা হলেন, বাঘাপাড়া উপজেলার দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান, মাসুদ রানা, জাকির হোসেন, পাকের আলী গ্রামের শরিফুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মাহামুদপুুর গ্রামের তাইফুল ইসলাম, কিসমত মাহামুদ গ্রামের শাহবুদ্দীন, হাশমত আলী, রিপন, জামালপুর গ্রামের আবুল হোসেন, বিপুল হোসেন, মিজানুর রহমান, আবু তালেব, ঘোষনগর গ্রামের ইমান আলী, সাইটখালী গ্রামের ফরহাদ, রামনগর গ্রামের মাসুদ রানা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারটি জিআই পাইপ, ৬টি রড, দুটি শাবল, ২২টি কাঠের বাট ও দুটি হাতুড়ি উদ্ধার করে। পরে জড়িতদের নাম যাচাই বাছাই করে ৪২ জনকে আসামি করে বাঘাপাড়া থানায় মামলা করেন।
মামলার বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু দাবি করেন, এসব মামলা ষড়যন্ত্রমুলক। বিএনপির ১০ তারিখের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে যশোরে নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। এসব নেতাকর্মীর বাড়ি থেকে আটক করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই