খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ পৌষ, ১৪৩১ | ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে এক জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৪
  বগুড়ায় ট্রাকচাপায় বাবা-মেয়েসহ নিহত ৩
  আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : আসিফ নজরুল

যশোরে ৫২ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধের নির্দেশ

যশোর প্রতিনিধি

যশোর সদর উপজেলার ৫২ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা স্থগিতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংক কালেক্টরেট ভবন শাখার ম্যানেজারকে এ নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ওইপত্রে উপজেলা সমাজসেবা অফিসারও স্বাক্ষর করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ ভাতা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের বক্তব্য, এটি আদালত অবমাননার সামিল।

ভাতা বন্ধের আদেশে ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক পত্রের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে ৫২ জন মুক্তিযোদ্ধা যশোর সদর উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক ‘গ’ তালিকাভুক্ত। অর্থাৎ ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা ও বিভিন্ন সামরিক বাহিনীর তালিকায় তাদের নাম নেই। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের আদেশের প্রেক্ষিতে তাদের ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যশোর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি যশোরের ৭২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ‘গ’ তালিকাভুক্ত করে। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের সম্মানী ভাতা বন্ধ করে দেয়। তখন তারা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আপিল করেন। একইসাথে হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ২০১৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তাদের ভাতা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওই ৭২ জনের মধ্যে ৫২ জনের ভাতা বন্ধের নতুন করে নির্দেশনা আসে। এরই প্রেক্ষিতে তাদের ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ৭২ জন মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ‘গ’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন ইতিমধ্যে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। বাকি ৫২ জনের বিষয়ে ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয় থেকে পত্র এসেছিল ভাতা বন্ধের জন্য। তবে, দেশের সকল উপজেলায় ‘গ’ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র যশোর সদর উপজেলায় এ ভাতা চালু ছিল। মন্ত্রণালয় থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে জরুরি ভিত্তিতে ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এদের মধ্যে ১৫ জনের ভাতা প্রদান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ এলে এই ১৫ জনের ভাতা প্রদান শুরু হবে। বাকিদের কি হবে সেটা তার জানা নেই।

ভাতা বন্ধ হওয়া কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, এই নির্দেশ আদালত অবমাননার সামিল। বৃদ্ধ বয়সে এসে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তারা অবিলম্বে ভাতা চালুর দাবি জানান। বিষয়টি নিয়ে তারা ফের উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর উপপ্রধান রবিউল আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আপিল করেছেন ভুক্তভোগীরা। যার শুনানী এখনো হয়নি। এছাড়া, হাইকোর্টের নির্দেশও রয়েছে ভাতা চালু রাখার। অথচ এই পরিস্থিতিতে ভাতা বন্ধ করে দেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে লজ্জাকর ও আদালত অবমাননার সামিল।

 

খুলনা গেজেট/ কে এম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!