খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ পৌষ, ১৪৩১ | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : আসিফ নজরুল
  সচিবালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত : প্রেস উইং
  কুড়িগ্রামে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, যুবদল নেতা নিহত

যশোরে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দারোগা ক্লোজ, অভিযান অব্যাহত

যশোর প্রতিনিধি

যশোর কোতোয়ালি থানার ১শ’ গজ দুরে ফিল্মি স্টাইলে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটকে শতাধিক অফিসার মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করছে।

যশোরের বারান্দীপাড়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্র ওই ছিনতাই, বোমাবাজি ও ছুরিকাঘাত ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য মিলেছে। ওই এলাকা কর্ডন করে দফায় দফায় অভিযান চলেছে। অভিযানে জড়িত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে, ঘটনার সময় পাশেই পুলিশের গাড়িতে অবস্থান করা এএসআই নজরুল ইসলামকে লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগমনী মোটর্সের মালিক ইকবাল হোসেন অজ্ঞাত আসামি করে কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে থানা সূত্র জানিয়েছে।

২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে যশোর শহরের এমকে রোডের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নিচে শত শত মানুষের সামনে ছুরিকাঘাত করে ও বোমা ফাটিয়ে আরএন রোডের আগমনী মোটর্সের ১৭ লাখ টাকা ছিনতাই হয়। ৭/৮ জনের একটি উঠতি দুর্বৃত্ত চক্র বকচরের হাবিবুর রহমান কুটি মিয়ার ছেলে টাকা বহনকারী এনামুল হককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে ব্যাগ নিয়ে গোহাটা রোড দিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাংকের সিসি টিভি ফুটেজ থেকে ছিনতাই, বোমবাজি ও ছুরিকাঘাতের দৃশ্য দেখে তাৎক্ষনিকভাবে অ্যাকশনে নামে পুলিশ। শতাধিক পুলিশ অফিসার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটকে অভিযান শুরু করেন। সিসি টিভি ফুটেজ থেকে ছবি বানিয়ে পুলিশের কয়েকটি টিম যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্পটে সোর্স কাজে লাগান।

পুলিশের কাছে তথ্য মিলেছে, ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ নিশ্চিত হয় ওই দুর্বৃত্ত চক্রের অধিকাংশের বাড়ি যশোর শহরের বারান্দীপাড়া এলাকায়। তারা চিহ্নিত ও দাগী। ওই তথ্যে ঘটনার দিন রাত থেকে দফায় দফায় অভিযান চলে। বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চলেছে বারান্দী মাঠপাড়ায়।

ওই এলাকার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অভিযানের সময় পুলিশ ওই এলাকা থেকে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে আটক করে নিয়ে গেছে। এরা হচ্ছে, বারান্দী মালোপাড়ার রবি রিকশাওয়ালার ছেলে শুভ, কবরস্থানপাড়ার লাল মিয়ার ছেলে নাসির ও বারান্দী মাঠ পাড়ার বিল্লাল হোসেন। এছাড়া বিল্লালের স্ত্রী নুর জাহানকেও পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে বলেও তথ্য মিলেছে। আটক বিল্লালের বাড়ি নড়াইলে। সে বারান্দী মাঠপাড়ায় ভাড়া থাকে। কখনও রিকসা চালায়, কখনও ইয়াবা বিক্রি করে বলেও এলাকাবাসী জানিয়েছে।

অপর একটি সূত্রের দাবি, আটক শুভর কাছ থেকে ছিনতাইকৃত ৭২ হাজার টাকাও পুলিশ উদ্ধার করেছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযানের কথা স্বীকার করলেও উল্লেখিতদের আটকের সত্যতা স্বীকার করেননি যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর ইনভেস্টিগেশন শেখ তাসমীম আলম। তিনি দাবি করেছেন, এ ঘটনায় পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জড়িতদের শনাক্ত ও আটকে। এ ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট মাঠে রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের আটক করা সম্ভব হবে।

এদিকে জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ছিনতাই ও বোমাবাজি ঘটনাস্থলের পাশেই যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই নজরুল ইসলামের অবস্থান ছিল। জেসটাওয়ারের পাশে দু’কন্সটেবলসহ ওই দারোগা গাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সিসি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে বোমাবাজির পরই এএসআই নজরুলকে বহন করা পুলিশের ওই গাড়িটি চলে যাচ্ছে। ঘটনার দিন দুপুর ২ টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশ সুপার কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানসহ এএসআই নজরুল ইসলামকে ডেকে পাঠান। তাদের সাথে কথা বলেন পুলিশ সুপার। এরপর বিকেল ৩ টার দিকে এএসআই নজরুল ইসলামকে লাইনে ক্লোজ করা হয়।

তবে থানা সূত্র জানিয়েছে, খাতা কলমে এএসআই নজরুল ইসলাম ঘটনার সময় মাদক মামলার দু’আসামি নিয়ে জেসটাওয়ারের সামনে দিয়ে আদালতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঘটনার সময় পুলিশের ওই গাড়িটি জেসটাওয়ারের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। ওই গাড়িতে তিনি ছিলেন না, ছিলেন দু’জন কন্সটেবল। ওই দু’কন্সটেবল তাকে ফোনে জানান বোমাবাজির ঘটনা। আসামি ছিনতাই করতে কেউ বোমাবাজি করেছে ভেবে এএসআই নজরুল গাড়িটি দ্রুত চালিয়ে আদালতের দিকে যেতে বলেন। পরে তিনি আদালতে হাজির হন। এরপরই সেটে পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে ওসিসহ এএসআই নজরুল ইসলামকে ডেকে পাঠান।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!