যশোরের মণিরামপুরে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। এ মামলায় মণিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এসআই আতিকুজ্জামানকেও আসামি করা হয়েছে। থানায় হত্যা মামলা দায়ের না করে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা করার কারণে হত্যার সহযোগী হিসেবে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন নিহতের পিতা যশোর সদর উপজেলার ভায়না গ্রামের মাহমুদুজ্জামান ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, নিহত নাওয়াল জামান ওরফে বর্ষার স্বামী মণিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের আরশীল কবীর, তার বাবা আজমত হোসেন, মা আসমা বেগম, একই গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে মনিরুল ইসলাম, মনিরুলের স্ত্রী শিল্পি বেগম, এনায়েত মোল্লার স্ত্রী হাসিনা বেগম ও উজ্জল আহম্মেদের স্ত্রী ইরানী ফারজানা। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামি ২১ মার্চ আদেশের দিন ধার্য করেছেন।
মামলায় বাদী বলেছেন, মেয়ে নাওয়ালকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন কবীর। যা মেনে নেয়নি নাওয়ালের পরিবার। এ কারণে বিভিন্ন সময় নাওয়ালকে কবীরের পরিবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। যা মোবাইল ফোনে পরিবারকে জানায় নাওয়াল।
এরমাঝে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে তিনটায় বাদী পরিবারকে জানানো হয় নাওয়াল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে বাদীর পরিবার মৃতদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। মুখ ও থুতনীতে জখমের চিহ্ন দেখা যায়। কিন্তু গলায় কোনো ফাঁসের দাগ ছিলো না। এছাড়া আশপাশের লোকজনের কাছে শুনে অনুমান করেন নাওয়ালকে মারপিটের পর হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছে কবীরের পরিবার। বিষয়টি বুঝতে পেরে নাওয়ালের মা নওশাবা তানবীন মণিরামপুর থানায় মেয়েকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করেন। যার তদন্তের দায়িত্ব পায় এসআই আতিকুজ্জামান।
অভিযোগটি সুষ্ঠু তদন্ত না করেই আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যার পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ থাকা সত্তেও থানায় হত্যা মামলা দায়ের না করে আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলা দায়ের করেন থানার ওসি মণিরুজ্জামান ও এসআই আতিকুজ্জামান।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, এসআই আতিকুজ্জামান এর আগে আসামিদের নিজ এলাকা নেহালপুর ক্যাম্প ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শুধু তাই নয়, বাদীর মেয়েকে যখন প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপরহরণ করেছিলো কবীর, সে সময়ও এসআই আতিকুজ্জামান সহযোগিতা করেছিলেন । বর্তমানে সকল আসামি ময়না তদন্তের রিপোর্টকে হত্যার পরিবর্তে আত্মহত্যায় রুপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
খুলনা গেজেট/ এসজেড