খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ পৌষ, ১৪৩১ | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : আসিফ নজরুল
  সচিবালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত : প্রেস উইং
  কুড়িগ্রামে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, যুবদল নেতা নিহত
প্রার্থীর জয়ের উল্লাস হয়েছে কাল

যশোরে যুবলীগ কর্মী আলী হত্যা, শনাক্ত খুনীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরের বাহাদুরপুর তেঁতুলতলা মোড়ে যুবলীগকর্মী মোহাম্মদ আলীকে (২৬) গুলি চালিয়ে হত্যা করে তারই পরিচিত সন্ত্রাসীরা। আর এ হত্যাকান্ডে জড়িত সবাইকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। কিন্তু তারা সবাই এথনও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

তবে আলী হত্যা নিয়ে স্থানীয়রা সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের পক্ষে কাজ করাকেই সামনে আনছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত ৬ জুন রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বাহাদুরপুর তেঁতুলতলা মোড়ে আব্দুর রহমানের ছেলে যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ আলীকে মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আলী সদ্য সমাপ্ত যশোর সদর উপজেলা নির্বাচনে তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী ছিলেন। ওইদিন রাতে মোটরসাইকেল প্রতীকের বিজয় উপলক্ষে তিনি উপশহর ই-ব্লকে প্রীতিভোজের আয়োজন করে। সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফেরার পথে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা আলীর মাথা ও পিঠে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি চালায়। আর এতেই ঘটনাস্থলে নিহত হন আলী হোসেন।

স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আলী হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকায় একটি বিষয় আলোচনা হচ্ছে। সেটি হচ্ছে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এ নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। নিহত মোহাম্মদ আলী বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর মোটরসাইকেল প্রতীকের জোরালো সমর্থক ও কর্মী ছিলেন। যে কারণে প্রতিপক্ষ এক প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে। প্রথমে ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কথা ছিল আলীর। কিন্তু পরে সে মোটরসাইকেলের পক্ষ নিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষরা। এরপর মোটরসাইকেল প্রতীকের বিজয়ের পর আলীর নেতৃত্বে এলাকায় খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ উল্লাস করায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের ওই প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করতে পারে বলে অনেকে মন্তব্য করেছে।

আলী হত্যার ঘটনায় স্থানীয় নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবীর তুহিন বলেন, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর সরাসরি নির্বাচনী কর্মী ছিলেন মোহাম্মদ আলী। এ কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। বিজয়ের আনন্দ ও খাওয়া-দাওয়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা তার উপর চড়াও হয়। তার মাথা ও পিঠে ৫ টি গুলি চালানো হয়েছে। তিনি ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আটক ও শাস্তি দাবি করেছেন।

এদিকে, হত্যার পর রাতেই হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) বেলাল হোসেনসহ পুলিশের একাধিক টিম। তারা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন কার এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তাদের আটকে ডিবি পুলিশসহ কয়েকটি টিম কাজ করছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, নিহত আলী হোসেনের পরিচিত প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে। আর হত্যা মিশনে যে ক’জন ছিল সবাই শনাক্ত হয়েছে। পুলিশের হাতে সবার নাম ঠিকানা চলে এসেছে। শনাক্ত হওয়া দুর্বৃত্তদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে আটকের স্বার্থে কারো নাম ঠিকানা তিনি জানাতে চাননি। নির্বাচনী জেরে এ হত্যাকান্ড কিনা এখনও পরিস্কার নয়। নানামুখি তথ্য আসছে সেসব বাপারেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জুয়েল ইমরান বলেছেন, স্থানীয় একটি পক্ষের সাথে নিহত আলীর জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল বলে তথ্য মিলেছে। তবে হত্যাকান্ডের নেপথ্যে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো বিষয় আছে কিনা তা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!