খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ পৌষ, ১৪৩১ | ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকারে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫, আহত ১০
  মাদারীপুরের কালকিনিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ চলছে, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
দু’মাসে একমণ গাঁজা উদ্ধার

যশোরে মাদক সিন্ডিকেট বেপরোয়া

যশোর প্রতিনিধি

চলমান করোনা সংকটের মধ্যেও যশোরে মাদক সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এখানে অন্যান্য মাদকের পাশাপাশি বর্তমানে গাঁজা বিক্রি যেমন বেড়েছে, তেমনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে বিপুল পরিমান উদ্ধারও হচ্ছে। আবার অনেক স্থানে গোপনে গাঁজার চাষও হচ্ছে। গত দু’মাসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রায় একমণ গাঁজা ও গাছ উদ্ধার করেছে। সাধারণ মানুষ এ অভিযান আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।

কয়েকটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্যে জানাগেছে, করোনা সংকটের মধ্যেও সংঘবদ্ধ গাঁজা সিন্ডিকেট বেপরোয়াভাবে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসময়ে কমপক্ষে চারটি স্পট থেকে গাঁজার গাছ উদ্ধার হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর বিজিবি সদস্যরা শার্শার শালকোনা সীমান্ত থেকে ২৪ কেজি গাঁজাসহ ৩ কারবারীকে আটক করে। এরা হলো, মেহেদী হাসান, রিয়াদ ও সবুজ মিয়া।

বিজিবি বলেছে বিপুল পরিমান এ গাঁজার চালান ভারত থেকে দেশে আনা হচ্ছিল। ২৭ আগস্ট রাত সোয়া ১০টায় বেনাপোলের নামাজ গ্রামে অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানা নামে এক যুবককে আড়াই কেজি গাঁজাসহ আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। মাসুদ রানা বৃত্তিআঁচড়া গ্রামের আইজ উদ্দীনের ছেলে। একইদিন রাতে কোতোয়ালি পুলিশ ঘোড়াগাছা গ্রামের ঈদগাহে বিক্রির সময় দু’শ’ গ্রাম গাঁজাসহ শফিকুল ইসলামকে আটক করে। ২ আগস্ট রাতে যশোরের হাশিমপুর পশ্চিমপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ইউনুস বিশ্বাসকে একশ’ ২০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়। ৮ আগস্ট রাতে যশোর কোতোয়ালি পুলিশ কচুয়ায় অভিযান চালিয়ে আবু সরোয়ার মোল্লার ছেলে আব্দুল্লাহকে আটক করে। তার বাথরুমের পাশে গাঁজা চাষ হচ্ছিল। একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার হলে আব্দুল্লাহ কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় গাঁছসহ তাকে আটক করে থানায় মামলা দেয়া হয়।

এছাড়া, ১৫ আগস্ট রাতে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা যশোর শহর ও শহরতলীতে অভিযান চালিয়ে ১০ ফুট লম্বা একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করে। শহরতলীর বিরামপুর বাবুপাড়া শীলা রায় স্কুলের পাশের হরেণ বিশ্বাসের বাড়িতে টিউবওয়েলের পাশে গাঁজার গাছটি রোপণ করা ছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খুলনা ও যশোর পুলিশের পৃথক অভিযানে আধা কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ১৫ জুলাই রাতে। এসময় গাঁজা দখলে রাখার ঘটনায় যশোর শহরের বেজপাড়া আনছার ক্যাম্প পানির ট্যাংকের পাশের মৃত আনোয়ার মোল্লার ছেলে হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিজ, চাঁচড়া চেকপোস্ট সোহরাব হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম রুস্তম, সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা গ্রামের সেলিমের ছেলে আবুজার ও সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া বেড়বাড়ি গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে বাবু আটক হয়। একইদিন পুলিশ গাঁজা বিক্রিকালে শফিকুল ইসলাম লিটন নামে যশোর সদর উপজেলার শ্রীবদ্দি ঘোড়াগাছা গ্রামের গাঁজা কারবারীকে আটক করে। ২০ জুলাই যশোরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেন। এসময় তিন মাদক বিক্রেতাকে আটক করা হয়। ২৪ জুলাই তালবাড়িয়া ক্যাম্পের সদস্যরা শেখহাটি তমালতলার নারায়ণ সাহা ওরফে নারু গোপালের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেড়শ’ গ্রাম গাঁজাসহ তাকে আটক করা হয়। ২৫ জুলাই উপশহর পার্কে অভিযান চালিয়ে গাঁজা বিকিকিনি চক্রের চারজনকে একশ’ ২০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করে পুলিশ।
এরা হচ্ছে, যশোর সদর উপজেলার মুড়লী খাঁ পাড়ার মৃত জান আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন, বিরামপুর কালীতলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে তাহসিন আহমেদ ওরফে অংকন, উপশহর এ ব্লকের মুকুল হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ও সি ব্লকের জাবেদ হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান জনি। ২৬ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে একশ’ ৫০ গ্রাম গাঁজাসহ একজনকে আটক করা হয়। একই রাতে শানতলার আজিজুর রহমানের চায়ের দোকানের সামনে থেকে বকুল হোসেনকে সাড়ে তিনশ’ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করে। এভাবে পুলিশি অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এর বাইরেও গাঁজা কারবারী, সেবনকারী ও মাদক কারবারীরা শহরময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ বলেছেন, চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আরও জোরালো করতে হবে। অনেক স্থানে গোপনে এসব কারবার চালানো হচ্ছে। এদেরকে সমূলে উৎপাটন করতে না পারলে মাদকের করালগ্রাস থেকে যুব সমাজসহ সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা যাবে না।

এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, গাঁজা ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইতিমধ্যে গাঁজার অনেকগুলো চালান আটক করা হয়েছে। এছাড়া এই কারবারে জড়িত অর্ধশত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!