পিতা অসহায়দের খাওয়াবেন ও বাড়িতে গাছ লাগাবেন, আর ছেলে বাড়িতে গরীবদের শিক্ষা দেবেন ও বিনামূল্যে রক্তদান করবেন। এর পাশাপাশি পিতা-পুত্র এলাকার অসহায় মানুষকে লিগ্যাল এইড সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করবেন। এ জাতীয় ১১ শর্তে যশোরের একটি আদালত তাদের দু’জনকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার যশোরের আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করায় একটি মাদক মামলায় এ সাজা প্রদান করে যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস তাদেরকে প্রবেশনে মুক্তি দেন। আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে শাহ আলম ও তার ছেলে আমির হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের এপিপি লতিফা ইয়াসমীন।
অ্যাডভোকেট লতিফা ইয়াসমিন বলেন, মামলা হওয়ার পর মাত্র এক বছর আট মাসের মাথায় এ রায় ঘোষণা করা হয়। এসময় প্রবেশন কর্মকর্তা এএনএম সোহরাব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ মার্চ উপশহর পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা আসামি শাহ আলমের বাড়িতে অভিযান চালান। এসময় তার বাড়ি থেকে ১০ বোতল ফেনসিডিল, এক বোতল বিদেশি মদ, একশ’ গ্রাম গাঁজা এবং ২০ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় উপশহর ক্যাম্পের এএসআই সফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দুইজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ২০২০ সালের ২১ মার্চ এসআই এইচএম এ লতিফ দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের রায়ে আসামি শাহ আলমের উল্লেখযোগ্য শর্তগুলো হলো, প্রতিমাসে পাঁচজন হতদরিদ্রকে খাওয়াতে হবে, দুটি বনজ ও তিনটি ফলজ গাছসহ পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে। এছাড়া, আমির হোসেন মাস্টার্স পাশ হওয়ায় তার এলাকার ২২ শিশুকে নিজ বাড়িতে সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন করে বিনামূল্যে শিক্ষাদান করতে হবে এবং তিন মাস পর পর রক্তদান করতে হবে।
এর বাইরে পিতা-পুত্র দু’জনকেই লিগ্যাল এইড সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, সৎ ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে হবে, কোনো প্রকার অপরাধের সাথে জড়ানো যাবে না। মাদকের সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না। দেশত্যাগ করতে পারবে না ও ট্রাইবুন্যাল কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথা সময়ে হাজির হতে হবে।
আদেশ অমান্য করলে সাজাভোগ করতে বাধ্য থাকতে হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই