খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

যশোরে তিন কিশোর পিটিয়ে হত্যা মামলায় কেন্দ্রের ৮ বন্দি গ্রেফতার

যশোর প্রতিনিধি

যশোরে তিন কিশোর হত্যা মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দি ৮ কিশোরকে আটক দেখিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রোকিবুজ্জামান ৮ কিশোরকে শ্যোন এরেস্টের জন্য রোববার আদালতে আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। এরা হলো, চুয়াডাঙ্গার আনিছ, গাইবান্ধার খালিদুর রহমান তুহিন, নাটোরের হুমাইদ হোসেন ও মোহাম্মদ আলী, পাবনার ইমরান হোসেন ও মনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর পলাশ ওরফে শিমুল ওরফে পালান এবং কুড়িগ্রামের রিফাত আহমেদ রিফাত। এছাড়া ওই ঘটনায় পাঁচ সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

গত ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোর বন্দীদেরকে অমানুষিক মারপিট করা হলে ৩ কিশোর নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় ১৪ আগস্ট রাতে নিহত কিশোর পারভেজ হাসান রাব্বির পিতা রোকা মিয়া যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অজ্ঞাত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। শনিবার তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

এদিকে, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ওই ঘটনায় সমাজসেবা অধিদপ্তর দুই সদস্যের যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, সেই কমিটির সদস্যরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। কমিটির প্রধান সমাজসেবা অধিদপ্তর ঢাকার পরিচালক সৈয়দ নূরুল বাসির বলেন, ইতিমধ্যেই তারা যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কিশোরদের সাথে কথা বলেছেন। তদন্তের জন্য তারা যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে যাবেন। এরপর ঢাকায় গিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবেন। এ তদন্ত কমিটির অপর সদস্য হলেন সমাজসেবা অধিদপ্তর ঢাকার উপপরিচালক এমএম মাহমুদুল্লাহ।

সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এ কমিটি বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে। কিশোরদের নির্মমভাবে মারপিটের পরও সময় মতো যদি তাদের হাসপাতালে নেয়া হতো, তাহলে প্রাণহানির ঘটনা নাও ঘটতে পারতো বলে মনে করছে তদন্ত কমিটি। নিহত তিন কিশোরকে হাসপাতালে নেয়া হয় মৃত অবস্থায়। আর ঘটনার প্রায় ৬/৭ ঘন্টা পর আহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়।
একই ঘটনার তদন্তে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির প্রধান যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু লাইছকে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ তমিজুল ইসলাম খান।

বৃহস্পতিবার এই ঘটনার পর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন, কেন্দ্রের শিশু কিশোরদের দু’টি গ্রুপের মধ্যে মারামারিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে আহত কিশোরদের বক্তব্য ও পুলিশের তদন্তে স্পষ্ট হতে থাকে যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দয় মারপিটের কারণেই তিন কিশোর নিহত ও ১৫ কিশোর আহত হয়। এ মামলায় আটককৃতরা হলেন, যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক প্রবেশন অফিসার মাসুম বিল্লাহ, কারিগরি প্রশিক্ষক ওমর ফারুক, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম ও সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান। বর্তমানে তারা রিমান্ডে রয়েছেন।

খুলনা গেজেট/এমবিএইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!