যশোরের বেনাপোলের রঘুনাথপুরে বুদো সরকার, আব্দুল্লাহ ও আজগর ট্রিপল হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার যশোর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম দুই আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম ইদ্রিস আলী।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি চার ভাই হলেন, বেনাপোলের রঘুনাথপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন নাসু, ফুলছদ্দিন কটা, আলাউদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন ও একই গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ঈমান আলী। এ মামলায় ওই চার ভাইয়ের বাবা আব্দুর রহমানকে খালাশ প্রদান করেছেন আদালত।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে বেনাপোলের রঘুনাথপুরে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হয়। এতে রাস্তার বিভিন্ন গাছ উপড়ে পড়ে। এসব গাছ বিক্রি করে এলাকার মসজিদের ফান্ডে টাকা জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ হয়। এরপর দিন ২৪ এপ্রিল সকালে গাছের ডাল কাটতে যায় ওই এলাকার নছু, আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন। এ সময় আরেক পক্ষ আব্দুল্লাহ, বুদোসহ অন্যরা এসে গাছ কাটতে নিষেধ করে। বলে তোমরা গাছ কেটোনা ওই গাছ কেটে বিক্রি করে মসজিদ ফান্ডে জমা দেয়া হবে। এসময় নছু, আলাউদ্দিনরা বলে ওই গাছ কি তোর বাপের। যা ইচ্ছে তাই করবি। এরপর উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আব্দুল্লাহ, বুদো, আজগার, সুমনসহ আরও কয়েকজনকে গুরুতর জখম করে। স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে হাসতাপালে নেওয়ার পথে মারা যায় আবদুল্লাহ। পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায় বুদো। এছাড়া, ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে মারা যান আজগর। এরপর নিহতদের স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত আসামিদের ৩টি বসত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় নিহত আব্দুল্লার ভাই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় ওই ছয় জনসহ সালমান শাহ নামে আরেক যুবককে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন পোর্ট থানার এসআই দীন মোহাম্মদ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই শরীফ হাবিবুর রহমান। তিনি তদন্ত শেষে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
মামলার বিচার চলাকালীন সালমান শাহকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অপর ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়। রোববার এ মামলার রায় ঘোষণার দিনে দুই আসামি আলাউদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের উপস্থিতিতে আদালত পাঁচজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড এবং একজনকে খালাশ প্রদান করে।
খুলনা গেজেট/কেডি