যশোরে গত ছয় মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭২৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৪২ জন। বাকি ১ হাজার ১৩০ রোগী এখনো করোনায় ভূগছেন। এ সময়ে মারা গেছেন ৪৪ জন। শনাক্তের এ হার নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে রয়েছে নানা বক্তব্য। কেউ বলছে এ পরীক্ষায় মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণে পরীক্ষা কম হচ্ছে আর শনাক্তও কমে যাচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, মানুষ অসুস্থ কম হচ্ছে, এ জন্য নমুনা পরীক্ষা কমে গেছে। এদিকে, শুক্রবার যশোরে নতুন করে আরো ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে যশোর সদরের ৯ জন ও অভয়নগরের ৪ জন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, যশোরে গত মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন ১ হাজার ১৩০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছেন ১ হাজার ১০৩ জন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন। বাকি ১৩ জন যশোরে পরীক্ষা করেছেন, কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরের বাইরে অবস্থান করছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে ৬৯১ জন। যা জেলার মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি। এছাড়া ঝিকরগাছায় ১৭৬ জন, কেশবপুরে ১০১, অভয়নগরে ৬৯, শার্শায় ৩০, মণিরামপুরে ২৭, চৌগাছায় ২২ ও সবচেয়ে কম রোগী রয়েছে বাঘারপাড়া উপজেলায় ১৪ জন। সব মিলিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭২৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৪২ জন। মারা গেছে ৪৪ জন। এছাড়া, যশোরের রোগী অনত্র গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন আটজন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র আরো জানায়, যশোর সদর উপজেলা এলাকায় যেমন সবচেয়ে বেশী রোগী আক্রান্ত হয়েছেন, তেমনি সুস্থও হয়েছেন সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৩৫৪ জন। সদরে মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। এছাড়া অভয়নগরে ৩৮১ জন সুস্থ হয়েছেন ও মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। শার্শা উপজেলায় শনাক্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২২৬ জন। মারা গেছেন দুইজন। মণিরামপুরে সুস্থ হয়েছেন ১৩০ জন। এখনো পর্যন্ত মণিরামপুরে মৃত্যু ঘটেনি। চৌগাছায় ১২৪ জন সুস্থ হয়েছেন ও মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। কেশবপুরে সুস্থ হয়েছেন ১৬৭ জন ও মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। ঝিকরগাছায় ৮১ জন সুস্থ হয়েছেন, কেউ মারা যায়নি। বাঘারপাড়ায় ৭৯ জন সুস্থ হয়েছেন ও মারা গেছেন একজন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মিডিয়া ফোকাল পার্সন ডাক্তার রেহেনেওয়াজ রনি। তিনি জানান, এছাড়া আরো বেশকিছু রোগী রয়েছে যাদের সন্ধান মেলাতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। অনেকে আক্রান্তের পর যশোর থেকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছেন।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, যশোরে করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমে আসতে শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, যখন করোনা পরীক্ষা ৩০০ টাকা করে ছিলো, তখন গড়ে প্রতিদিন ২০০’র বেশী নমুনা সংগ্রহ করা হত। কিন্তু এখন পরীক্ষা ফি ১০০ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু এখন গড়ে নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ জনের। তেমনি ফলাফলও আসছে কম। তিনি দাবি করেন, সে সময় অসুস্থতার সংখ্যা বেশী ছিল, ফলে রোগীরও চাপ ছিল। এখন অসুস্থতার সংখ্যা কমে গেছে ফলে শনাক্তও হচ্ছে কম।
খুলনা গেজেট/এমআর