যশোরে আলোচিত রওশনারা রোশনি হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয় (১৬) ও বোরহান (১৬) সহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। আটক রিয়াজুল ইসলাম হৃদয় নিহত রোশনির বোনের ছেলে ও যশোর উপশহরে ডি-ব্লকের মাহমুদুর আলম চৌধুরীর ছেলে ও বোরহান ঘাতক হৃদয়ের বন্ধু ও একই এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে।
এ ঘটনায় বোরহানের মা ও হৃদয়ের আরেক বন্ধু নাহিদকেও আটক করা হয়েছে। নিহত রোশনী শহরের আশ্রমমোড় এলাকার সাবেক প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মৃত মুস্তাফিজুর রহমান মনুর স্ত্রী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র এসআই স্নেহাশিস দাস জানান, হৃদয় মাঝে মধ্যে তার খালা ভিকটিম রোশনির বাড়িতে যাতায়াত করতেন। হত্যার কয়েকদিন আগে হৃদয় ও তার বন্ধু বোরহানকে সাথে নিয়ে খালা রোশনির বাড়িতে যায় ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায় সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ আগস্ট বিকেলে রোশনির বাড়িতে গিয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে আচমকা ধারালো চাকু দিয়ে রোশনির পেটে বুকে ও গলায় উপর্যুপরি আঘাত ও হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর তারা মৃতদেহ কম্বল দিয়ে পেচিয়ে ঘরের বঙ্খাটের কাঠের চালার নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে রোশনির ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও আলমারিতে থাকা সোনার ও ইমিটেশনের গহণা নিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় বাড়িতে আর কেউ ছিল না। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়।
এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই স্নেহাশিস দাস, এসআই ডিএম নুর জামাল হোসেনের সমন্বয়ে একটি টিম গোপান সংবাদ পান হত্যাকারীরা ঢাকা ও বাগেরহাট জেলায় অবস্থান করছে। এরই ভিত্তিতে ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে আটটায় তারা প্রথমে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় অভিযান চালায়। এখানে বোরহানকে তার মামা বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এরপরে তাকে নিয়ে একইদিন বিকেল সাড়ে ৫ টায় ঢাকার ভাষানটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় মূল ঘাতক রিয়াজুল আলম চৌধুরী ওরফে হৃদয়কে। এখানে সে তার খালা বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিল। তাদেরকে যশোরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যা সংক্রান্ত সবকিছু তারা পুলিশকে জানায়। এরই ভিত্তিতে নিহত রোশনির বাড়ির লুন্ঠিত মালামাল ও হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও গেঞ্জি হৃদয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। খুনি হৃদয় মাদকাসক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার দুপুরে তাদেরকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা রোশনি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই