যশোরের রূপদিয়া বাজারের গ্রামীন ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল অপারেশনে এক প্রসুতির মৃত্যু ঘটেছে। এ মৃত্যুর প্রতিবাদে প্রসূতির স্বজন ও বিক্ষুব্ধ জনতা ক্লিনিকের সামনের অংশ ভাঙচুর করেছে। এরপর তালা ঝুলিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়েছে। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়।
অভিযোগে জানা যায়, সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের আন্দুলিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুনের (২৫) সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে প্রসব বেদনা ওঠে। এসময় রিমা খাতুনের স্বজনরা স্থানীয় ধাত্রী ওই গ্রামের জুলফিকার আলীর স্ত্রী সালেহা বেগমকে খবর দেন। এ সময় সালেহা বেগম তাদেরকে বলেন, রোগীর অবস্থা বেশি ভালো না, এখনই ক্লিনিকে নিতে হবে। তখন রিমা খাতুন জানান, আমার আদ-দ্বীন হাসপাতালের কার্ড করা আছে। আমাকে ওখানে নিয়ে চলেন। কিন্তু ওই ধাত্রি সালেহা বেগম গ্রামীন ক্লিনিক এর এজেন্ট, তিনি তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে রূপদিয়া বাজারের গ্রামীন ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে সাথে সাথেই তার অপারেশন করেন ক্লিনিক মালিকের স্ত্রী ডাক্তার নুর সালি। কিন্তু অপারেশনের সময় পর্যাপ্ত রক্ত না থাকায় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তখনই তাকে তড়িঘড়ি করে যশোর থেকে অ্যাম্বুলেন্স এনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পথিমধ্যে ওই নারীর মৃত্যু ঘটে।
এ সময় রোগীর স্বজনরা সালেহা বেগমকে আটকে রাখেন। এক পর্যায়ে তিনি জানান, এই ধরনের রোগী এই ক্লিনিকে এনে দিলে তাকে ১২শ’ টাকা কমিশন দেয়া হয়। তাই আমি এ কাজ করে থাকি।
এদিকে, মৃত রিমা খাতুনের স্বামী রফিকুল ইসলাম জানান, সালেহা বেগম তাকে জানিয়েছেন আদ দ্বীন হাসপাতালের চেয়ে গ্রামীন ক্লিনিকে অল্প পয়সায় ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে। কিন্তু আমি বলছিলাম টাকা পয়সার ব্যাপার না ভালো চিকিৎসার দরকার, তারপরে উনি আমার পরিবারের অন্যদেরকে ভুল বুঝিয়ে এই ক্লিনিকে নিয়ে এসেছে। এ কথা বলেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রিমা খাতুনের ছয় বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নবজাতক সন্তানটি সুস্থ আছে।
এদিকে, এ ঘটনার খবর পেয়ে সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান তার টিম নিয়ে রুপদিয়ায় ঘটনাস্থলে যান এবং ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও গ্রামীন ক্লিনিকে কচুয়া গ্রামের ফারুক হোসেনের মেয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটে। পরবর্তীতে মেয়েটির পরিবারের সাথে আপোষ মীমাংসা করে পুনরায় ক্লিনিক চালু করে।
খুলনা গেজেট/কেডি